শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই
টানা দরপতন আরও লেনদেন খরার বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের মতো দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতন হয়েছে। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার ১০ গুণের বেশি প্রতিষ্ঠানের। ফলে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে তার পাঁচগুণের বেশি। ফলে এ বাজারটিতেও কমেছে মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে পতন দেখতে হলো বিনিয়োগকারীদের।
অবশ্য এর আগে গত সপ্তহজুড়েও দরপতন দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যাওয়ায় এক সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৩৭ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৯ শতাংশ।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কমে ১১ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫০ শতাংশ। ইসলামী শরিয়াহভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমে ৫ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ।
আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৮ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট এবং ডিএসই শরিয়াহ্ ৪ পয়েন্ট কমে যায়। সেইসঙ্গে দেড় মাস পর ডিএসইতে ৩০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের সময় ১০ মিনিট হওয়ার আগেই বদলে যায় বাজারের চিত্র।
দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় নাম লেখায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দরপতনের তালিকা, যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষপর্যন্ত। ফলে সূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ১৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪২টির। আর ১৪১টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৮৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৪১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৮ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ২৮ কোটি ৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে— শাইনপুকুর সিরামিকস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, জেমিনি সি ফুড, আমরা নেটওয়ার্ক, ওরিয়ন ফার্মা, মুন্নু এগ্রো ও বসুন্ধরা পেপার।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১০২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫২টির এবং ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এমএএস/এমএএইচ/এএসএম