এক বছরে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
নানা কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকে এবং তা কখনো আগের অবস্থায় ফেরে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। গত বছরের (২০২২ সালের) জানুয়ারি মাসে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বছরের শুরুতে মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৫৭ শতাংশ
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত উন্নয়ন সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎপাদন উপকরণের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এর ফলে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৯ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছিল। গত এক বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। তবে কয়েক মাস ধীরে ধীরে কমে আসছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মজুরি হারও বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মজুরির হার বেড়ে ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি মাসে যা ছিল ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এ সময়ে মজুরি ভালোই বেড়েছে।
তবে মূল্যস্ফীতি আগের অবস্থায় ফিরে যায় না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারণ উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। গরুর ফিড ও পোলট্রি ফিডের দাম অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি পরিবহন খরচও বেড়েছে। সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। এক কেজি ওজনের মুরগির দাম এখন ২৭০ টাকা। ডিমের দামও বাড়তি। তবে শাকসবজির দাম সহনীয় আছে।
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে সেভাবে বেতন বাড়েনি
দেশের আর্থিক অবস্থা প্রসঙ্গে ড. শামসুল আলম বলেন, গত এক মাসে রেমিট্যান্সের ভালো লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। সবশেষ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার। অথচ এরপর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের রেমিট্যান্স যোগ করলে বেড়ে দাঁড়াবে ১২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে।
তিনি বলেন, রিজার্ভ গঠনে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি ভূমিকা রাখে। এক মাসে দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। গত এক মাসে রিজার্ভও ইতিবাচক। রিজার্ভের তথ্য এখন অনেক ইতিবাচক। রিজার্ভ ধীরে ধীরে ইতিবাচক দেখা যাচ্ছে। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে রপ্তানি আয় হয় ২৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। এর সঙ্গে এক মাস (জানুয়ারি) যোগ করলে তা ৩২ দশমিক ৪৪ বিলিয়নে দাঁড়ায়। তার মানে এক মাসে রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের জাম্প করেছে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা ইমপোর্ট (আমদানি) নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছি। আমদানি কমে গেলে সমস্যা আছে। তবে গত মাসে আমদানি বাড়তি হলেও এটা খারাপ না। কারণ অনেক পণ্য তৈরির জন্যও আমদানি করা জরুরি, যেমন আরএমজি (তৈরি পোশাকশিল্প)।
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি নিয়ে ‘লুকোচুরির’ কারণ জানতে চেয়েছে আইএমএফ
তিনি বলেন, আমি সবসময় তথ্য দিয়ে কথা বলি, সেজন্য কঠিন কথাও বলতে হয়েছে। আমি সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে কথা বলিনি। কারোর প্রতি কখনো অশ্রদ্ধা প্রকাশ করি না।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন। উন্নয়ন সংলাপে অংশ নেন- ডিজেএফবি সভাপতি হামিদ-উদ-হামান, সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক মফিজুল সাদিক, অর্থ সম্পাদক সাইদ রিপন, দপ্তর সম্পাদক এম আর মাসফি প্রমুখ।
এমওএস/কেএসআর/জিকেএস