বিরোধ নিষ্পত্তির অভাবে বাণিজ্যের ক্ষতি ৬০০ বিলিয়ন ডলার


প্রকাশিত: ০৪:২৩ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির অভাবে বৈশ্বিক বাণিজ্যে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়। আর শুধু বাংলাদেশেই এ ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআইয়ের অডিটোরিয়ামে ‘সার্ক অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোতে বিকল্প বিরোধ কাউন্সিলের (সারকো) ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এসব তথ্য জানান।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক) এবং সার্ক আরবিট্রেশন কাউন্সিল (সারকো) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। এসময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এম ফিদা কামাল।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের (বিয়াক) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, সার্ক আরবিট্রেশন কাউন্সিলের (সারকো) মহাপরিচালক থুসানথা উইজেমানা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, গত কয়েক দশক যাবত বাংলাদেশ সফলভাবে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে দেশের বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা যুক্ত হওয়ার ফলে দেশে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সার্ক আরবিট্রেশন সেন্টার (সারকো) একটি প্রাতিষ্ঠানিক প্লাটফর্ম, যেখানে ব্যবসায়িক বিরোধসমূহ স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে উঠে দক্ষতার সঙ্গে নিষ্পত্তি করা হয়। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়াটি জনপ্রিয় করতে হলে এর উপর বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করতে হবে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।

স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ বলেন, সার্ক আরবিট্রেশন সেন্টার (সারকো)-এর মত প্রতিষ্ঠান সার্ক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতাসহ অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তি এবং এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, বাণিজ্য বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির দীর্ঘ সূত্রিতার জন্য সার্ক অঞ্চল ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরিতে পিছিয়ে পড়ছে।

বিয়াকের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে বাণিজ্য বিষয়ক প্রক্রিয়াগুলো বিচারিক আদালতে সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়, যা দেশের বেসরকারি খাতকে নতুন নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করে থাকে, এক্ষেত্রে আরবিট্রেশন এবং মেডিয়েশন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এম ফিদা কামাল বলেন, দেশের আদালতগুলোর মামলা জট কামানোর ক্ষেত্রে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।

তিনি বলেন, বাণিজ্যিক বিরোধের ক্ষেত্রে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবহার করলে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে উভয় পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়।

সার্ক আরবিট্রেশন কাউন্সিল (সারকো)-এর মহাপরিচালক থুসানথা উইজেমানা বলেন, এ অঞ্চলে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অন্যান্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে সারকো একটি লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে কাজ করতে পারে।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় এফডিআই ছিল ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বৈশ্বিক এফডিআই’র ১ দশমিক ৭ শতাংশ। তিনি আরোও বলেন, সারকো-এর মূল লক্ষ্য হলো : সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যকার বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ধারাকে সুপ্রসারিত করা।

মুক্ত আলোচনায় সাবেক প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান ও তফাজ্জল ইসলাম, বিচারপতি মো. আওলাদ আলী, বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম এবং সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে সারকো, বিয়াক এবং ডিসিসিআইয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এসময় সারকো-এর মহাপরিচালক থুসানথা উইজেমানা, বিয়াক-এর নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ এ. (রুমি) আলী এবং ডিসিসিআই মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এসআই/একে/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।