বাণিজ্যমেলা
শেষ সময়ে মিনিপার্কে শিশু-দর্শনার্থীদের ঢল
জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসর। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরে অনুষ্ঠিত এই বাণিজ্যমেলার প্রধান ফটক করা হয়েছে মেট্টোরেলের আদলে। মেলার শুরুর দিকে ক্রেতাদের তেমন আনাগোনা না থাকলেও শেষ সময়ে দেখে গেছে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
এদিকে দ্বিতীয়বারের মতো পূর্বাচলে মাসব্যাপী মেলার প্রথমবারের মতো রয়েছে মিনিপার্ক। যা মেলার আগত শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের চিত্তবিনোদনের খোরাক মেটাচ্ছে। এদিকে মেলায় শেষ সময়েও মিনিপার্কে দেখা গেছে সব বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভিড়।
জানা যায়, এবারের মিনিপার্কে ইলেক্ট্রিক বোট, ইলেকট্রিক নাগর দোলা, থ্রি স্টেপ হাই স্লিপার, ম্যাজিক ওয়াটার বল, হানি সিন, বেবি ঘোড়া, মিনি ট্রনসহ কয়েকটি রাইড রয়েছে।
মো. এরফান হোসেন নামে এক দর্শনার্থী জানান, পূর্বাচলে আমি প্রথমবারের মতো বাণিজ্যমেলায় এসেছি। পূর্বে ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাণিজ্যমেলায় আসা হতো। মাসব্যাপী মেলার শেষ সময়ে আজ প্রচুর মানুষ এসেছে। মিনিপার্কের নৌকা দেখে গ্রামীণমেলার কথা মনে করে দিয়েছে। এই রাইডটি দেখে নিজেকে সামলাতে পারিনি। বাণিজ্যমেলায় আমি খুব আনন্দ করেছি।
আসিফ হাসান দূর্জয় নামে আরেক দর্শনার্থী জানান, পরিবারের সবাই বাণিজ্যমেলায় এসেছি। মেলার শেষ মুহূর্তে অনেক মানুষ ভিড় করেছে। আমার ভাগ্নী স্নেহার জন্য জাম্পিং রাইডের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই শিশুদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা করার জন্য।
মাহমুদা খানম নামে এক দর্শনার্থী জানান, বাণিজ্যমেলায় আজ কেনাকাটা করতে এসেছি। আমি এখানে আমার ছোট ছেলে তানভীরের জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছি। বাণিজ্যমেলায় আসার পূর্বে সে ওয়াটার বলের ভিডিও দেখেছে। তাই তাকে মিনিপার্কের ওয়াটার বলে চড়িয়েছি।
থ্রি স্টেপ হাই স্লিপার রাইডের দায়িত্বে থাকা মো. রানা জানান, মেলার শুরুর দিকে স্টল-প্যাভিলিয়নে ভিড় কম থাকলেও আমার এই রাইডটিতে সবসময় প্রচুর ভিড় থাকে। কারণ এই রাইডটিতে খেলে শিশুরা খুব আনন্দিত হয়। এবারের মিনিপার্কের এই রাইডটি শিশুদের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
ট্রামপোলিন জাম্পিং খেলার দায়িত্বে থাকা মো. মামুন মিয়া জানান, শিশু কিশোরদের জন্য আমরা এই খেলার ব্যবস্থা করেছি। মেলায় প্রথম দিন থেকেই ভালো সাড়া পাচ্ছি। তবে আজ শেষ সময়ে এসেও কয়েকগুণ বেশি দর্শনার্থী তাদের শিশুদের নিয়ে এখানে হাজির হয়েছেন।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৯৯৫ সাল থেকে যৌথ উদ্যোগে মেলার আয়োজন করেছে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে। তবে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় বাণিজ্যমেলা।
সেবার বাণিজ্য মেলায় শিশুপার্ক ছিল না। এবার মিনি শিশুপার্ক থাকছে। ফুডকোর্ট নিচে চলে গেছে। এবারের আসরে আগের তুলনায় মেলায় স্টলের সংখ্যা বেড়েছে।
এবারের মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপালসহ ১২টি দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। মেলায় ১৭টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। মেলায় দেশ-বিদেশের মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২২৫টি।
রাশেদুল ইসলাম রাজু/এমআরএম