ভোক্তা অধিকারের অভিযান
জমজমের পানি বিক্রি নিয়ে যা হলো বায়তুল মোকাররম মার্কেটে
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটে জমজমের পানি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, এসব পানি সৌদি আরব থেকে হাজিরা এনেছেন। তারা সেগুলো সংগ্রহ করে বিক্রি করেন।
জমজমের পানির পাঁচ লিটারের বোতল সৌদি আরব থেকে এনে কেউ একসঙ্গে, আবার কেউ খুচরা বিক্রি করছেন। সর্বনিম্ন ২৫০ এমএল’র বোতলও বিক্রি হয়।
এই জমজমের পানি আসল কি না, যাচাই করতে বায়তুল মোকাররম মার্কেটে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রোববার দুপুরে এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং সহকারী পরিচালক রজবী নাহার রজনী।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে জমজমাট আতর-টুপি-জায়নামাজের বাজার
এসময় কয়েকটি দোকানে অভিযান চালানো হয়। বায়তুল মোকাররম মার্কেটের আতর-টুপির দোকানে পাওয়া যায় জমজমের পানি। এ পানি কীভাবে দেশে এলো, পানি আসল কি না, পানি বিক্রির বৈধতা আছে কি না, এসব বিষয়ে জানতে চান ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা।
ব্যবসায়ীরা জানান, হজ বা ওমরাহ করে দেশে ফেরার সময় হাজিরা জমজমের পানি নিয়ে আসেন। চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পানি নিয়ে আসেন তারা। পরে সেগুলো মার্কেটের অনেক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। পানি আসল কি না, তাদের কোনো ধারণা নেই। বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে চলে এই ব্যবসা।
ওই পানি বিক্রির বৈধতার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, জমজমের পানি বৈধভাবে কেউ আমদানি করে না। হাজিরা সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। জমজমের পানির চাহিদা থাকায় ভালো দামে বিক্রি হয়।
আরও পড়ুন: জমজম কূপ খননের বিশেষ ঘটনা
এ বিষয়ে বায়তুল মোকাররম মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই মার্কেটে জমজমের পানি বিক্রি হয়, এটা আমার জানা ছিল না। আমি নিজেও হজ করে আসার সময় জমজমের পানি সঙ্গে নিয়ে এসেছিলাম। তবে সেগুলো পরিবার-পরিজনকে দিয়েছি। হাজিরা এসব পানি বিক্রি করে, এ কথা আমার বিশ্বাস হয় না।
তিনি বলেন, যেসব ব্যবসায়ী জমজমের পানি বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে পরবর্তী সময়ে এই পানি আইন অমান্য করে বিক্রি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হবে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই পানি বিক্রি করার বিষয়ে ইসলামে কী ব্যাখ্যা আছে, জানতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজন মুফতির সঙ্গে কথা বলেন ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। বৈধভাবে জমজমের পানি এনে বিক্রি করা যাবে বলে জানিয়েছেন ওই মুফতি।
আরও পড়ুন: জমজমের পানি যে সময় পান করতে বলেছেন বিশ্বনবি
অভিযান শেষে মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, যেসব ব্যবসায়ী জমজমের পানি বিক্রি করছেন সবাইকে সোমবার ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। জমজমের পানি বিক্রির বিষয়ে ব্যবসায়ীরা যেসব তথ্য দিয়েছেন সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। যেহেতু জমজমের পানির সঙ্গে ধর্মীয় বিষয় জড়িত, তাই আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এনএইচ/এমএইচআর/জিকেএস