শেয়ারবাজারে বিমার দাপট, নেতৃত্বে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৩৭ এএম, ২১ জানুয়ারি ২০২৩

গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। এতে গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারের দাম বাড়ার দিক থেকে শীর্ষ দশটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছয়টি স্থানই দখল করেছে বিমা খাতের প্রতিষ্ঠান। আর এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে বেসরকারি সাধারণ বিমা কোম্পানি প্রগতি ইন্স্যুরেন্স।

প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার গত সপ্তাহে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চাহিদার শীর্ষে চলে আসে। ফলে সপ্তাহজুড়েই এই সাধারণ বিমা কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষ স্থান দখল করেছে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স।

গত সপ্তাহের শেয়ারবাাজরে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে এক সপ্তাহে প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৮ টাকা ৯০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৬ টাকা ৩০ পয়সা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৬৭ টাকা ৪০ পয়সা।

আরও পড়ুন: বাজার মূলধন বাড়লো দুই হাজার কোটি টাকা

মূল্যে বড় ধরনের উত্থান হলেও যেসব বিনিয়োগকারীর কাছে কোম্পানিটির শেয়ার আছে, তাদের বড় অংশই সেটা বিক্রি করতে চাননি। ফলে সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৪৩ হাজার টাকা। প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৮ হাজার টাকা।

৬৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে। গত কয়েক বছর ধরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের বড় লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। সর্বশেষ ২০২১ সালে কোম্পানিটি ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগে ২০২০ সালে ৩০ শতাংশ নগদ, ২০১৯ সালে ২২ শতাংশ নগদ, ২০১৮ সালে ১৩ শতাংশ নগদ ও ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়। এছাড়াও ২০১৭ সালে ১৩ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের পরেই গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ছিল সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। এই সাধারণ বিমা কোম্পানিটিও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে কম দাপট দেখায়নি। প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের মতো এই কোম্পানিটির শেয়ারের দামও এক সপ্তাহে ২৪ শতাংশের ওপরে বেড়েছে। গত সপ্তাহে সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ১৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ৪ টাকা ৮০ পয়সা।

আরও পড়ুন: বিমা খাতের ‘কলঙ্কিত’ বছর

২০০৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এই সাধারণ বিমা কোম্পানিটি প্রতিবছর বিনিয়োগকারীদের ১০ অথবা ৫ শতাংশ করে লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে কখনো নগদ লভ্যাংশ, আবার কখনো বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছে কোম্পানিটি। সর্বশেষ দুই বছরে (২০২১ ও ২০২০ সাল) সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০১৯ ও ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।

গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ দাম বাড়ার তালিকায় তৃতীয় স্থানও দখল করেছে বিমা খাতের কোম্পানি। শেয়ারের দাম ১৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ বাড়ার মাধ্যমে এই স্থানটি দখলে নিয়েছে সাধারণ বিমা কোম্পানি ঢাকা ইন্স্যুরেন্স। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬ টাকা ৭০ পয়সা। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এই কোম্পানিটিও গত কয়েক বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের বড় লভ্যাংশ দিচ্ছে।

এর মধ্যে সর্বশেষ ২০২১ সালে বিনিয়োগকারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ঢাকা ইন্স্যুরেন্স। এর আগে ২০২০ সালে ২০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ ও ২০১৮ সালে ১৫ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। তার আগে ২০১৭ সালে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ, ২০১৬ সালে ১২ শতাংশ নগদ এবং ২০১৫ সালে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ঢাকা ইন্স্যুরেন্স।

আরও পড়ুন: নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ জাকের কোম্পানি নিষিদ্ধ

এই তিন বিমা কোম্পানির পাশাপাশি দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স এবং কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স। এর মধ্যে মেঘনা লাইফের শেয়ারের দাম সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের দাম বেড়েছে ১৫ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।

বিমা কোম্পানির বাইরে গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের ১৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ দাম বেড়েছে। এছাড়া বিডিকম অনলাইনের ১৬ দশমিক ১২ শতাংশ, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং জেমিনি সি ফুডের ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ দাম বেড়েছে।

এমএএস/কেএসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।