শেষের চমকে বাড়লো সূচক
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে বড় দরপতন দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কমেছে। দুই বাজারে মূল্যসূচকের দুই চিত্র দেখা গেলেও উভয় বাজারেই লেনদেন কমেছে।
এদিকে গত কয়েকদিনের মতো ডিএসই এবং সিএসইতে দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাই বেশি। দাম অপরিবর্তিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা) আটকে রয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যেসব বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে তারা ক্রেতার অভাবে তা বিক্রি করতে পারছেন না।
এর আগে গত সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এর মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ডিএসইতে চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটে। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার সূচক ও লেনদেন কিছুটা বাড়লে ডিএসইতে লেনদেন চারশ কোটি টাকার নিচে থাকে। তবে সোমবার লেনদেন বেড়ে চারশ কোটি টাকার ওপরে যায়। কিন্তু কমে সবকয়টি মূল্যসূচক।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে যায়। লেনদেনের ৪০ মিনিটের মাথায় সূচক কমে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনের শুরুতে মূল্যসূচকের এমন পতন প্রবণতা দেখা দিলেও শেষ ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ে। এতে পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয় সূচক। একই সঙ্গে বড় হয় দাম বাড়ার তালিকা।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৬৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪টির। আর ২৪০টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২০০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়ার দিনে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৩৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৮২ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
বাজারটিতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ২২ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নাভানা ফার্মার ১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বসুন্ধরা পেপার, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, চর্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আমরা নেটওয়ার্ক, ওরিয়ন ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং এবং পদ্মা ইসলামী লাইফ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ২ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৩৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬টির এবং ৮২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এমএএস/কেএসআর/এমএস