সোনা চোরাচালান বন্ধে বিএফআইইউকে বাজুসের ৭ প্রস্তাব
সোনা চোরাচালান বন্ধে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) সাত প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)।
সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পঞ্চম তলায় কাজেমী সেন্টারে বিএফআইইউ ও বাজুস আয়োজিত যৌথসভা শেষে এ কথা বলেন বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর। এসময় বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাসহ বাজুস নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাজুস সভাপতি বলেন, অর্থপাচার ও ডলার সংকটের নেপথ্যে রয়েছে সোনা চোরাচালান। অনেকে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। আইন থাকলেও যথাযথ প্রয়োগ নেই। আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে সোনা চোরাকারবারিরা খালাস পাচ্ছেন। সোনা চোরাচালান বন্ধে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে জামিন অযোগ্য মামলা দিতে হবে।
সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, জুয়েলারি শিল্পে সোনা চোরাচালান বড় ধরনের সংকট ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোরাচালান শুধু দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে না। চোরাচালানের ফলে অর্থনৈতিক সংকট বাড়ছে। এ অবস্থায় মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত বিএফআইইউকে সাত প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস।
সভায় বাজুস জানায়, আমরা ধারণা করছি, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে সারাদেশের জল, স্থল ও আকাশপথে প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে, যা বছর শেষে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা দাঁড়ায়। এ অবস্থায় মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত বিএফআইইউকে সাত প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস।
বাজুসের প্রস্তাবগুলো হলো—
# সোনা চোরাচালান ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ এবং চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাজুসের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং সেল গঠন।
# চোরাকারবারিরা যাতে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে কঠোর আইন প্রণয়ন করা।
# সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (যেমন বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ) জোড়ালো অভিযান নিশ্চিত করা।
# চোরাচালান প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সংস্থাগুলোর সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
# ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলংকার আনার সুবিধা অপব্যবহারের কারণে ডলার সংকট, চোরাচালান ও মানিলন্ডারিংয়ে কী প্রভাব পড়ছে, তা নিরূপনে বাজুসকে যুক্ত করে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা।
# অবৈধ উপায়ে কোনো চোরাকারবারি যেন সোনার বার বা অলংকার দেশে আনতে এবং বিদেশে পাচার করতে না পারে সে জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া।
# জল, স্থল ও আকাশপথ ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে কেউ যাতে সোনার বার বা অলংকার আনতে না পারে এজন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করা।
ইএআর/এমএএইচ/জেআইএম