শীতের সবজিতে ভরপুর বাজার, নাগালের বাইরে দাম
দ্রব্যমূল্য বাড়ছেই। স্বস্তি মিলছে না কোনো পণ্যেই। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা। বাজারে গিয়ে কপালে ভাঁজ পড়ছে অনেকের। প্রয়োজনের তুলনায় কম বাজার নিয়ে ঘরে ফিরতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের এই ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে সংসার চালাতেই হিমশিম অবস্থা সীমিত আয়ের মানুষের।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার বাজারে শীতের আগাম সবজির সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু দাম লাগামহীন। ছোট ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। শিমের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।
রাজধানীর মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা কামরুলকে মাঝারি আকারের প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তার দোকানে থাকা একটু বড় ফুলকপিগুলো ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
একই বাজারে টমেটো ও গাজরের কেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, শসা, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স ও পটলের দামও কমেনি। এসব সবজি কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা কামরুল জাগো নিউজকে বলেন, শীত যত বাড়বে শীতের সবজির সরবরাহ তত বাড়তে থাকবে। সরবরাহ বাড়লে তখন দামও কমবে। তবে এখন বাজার অনেকটাই চড়া।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ে অনেক কৃষকের সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ফলে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। যদিও বাজার ঘুরে সরবরাহ সংকটের কোনো চিত্র দেখা যায়নি। প্রতিটি বাজারেই থরে থরে সাজানো শীতের সবজি।
বছরের এই সময়টাতে শীতের নতুন সবজির প্রতি ভোক্তাদের বাড়তি আগ্রহ থাকে। কিন্তু বাড়তি দামে সেই আগ্রহে ভাটা পড়েছে। ক্রেতাদের অনেকে চার পদের জায়গা দুই পদের সবজি কিনে ঘরে ফিরছেন। বিক্রেতারা বলছেন, শীতের সবজির ভরা মৌসুম আসতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
রাজধানীর একটি বাজারে সুমন হোসেন নামের এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি বাড়তি দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মানুষের কপাল পুড়েছে করোনা আসার পরই। সবকিছু চলছে নিয়ন্ত্রণহীন। সবকিছুর দায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। শীতের সবজির দামেও কি যুদ্ধের প্রভাব রয়েছে!
এমন ক্ষোভ ও বিরক্তি ঝাড়ছেন ক্রেতাদের অনেকে। এসময়ে বাজারে কেবল মুলা ছাড়া অন্য কোনো সবজি ৬০ টাকা কেজির কম পাওয়া যাচ্ছে না। ফুলকপি, বাঁধাকপি দামও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এছাড়া বারোমাসি সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে অন্তত ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এদিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পটল ৫০- ৬০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৮০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা, মানভেদে কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা আর চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এনএইচ/এমকেআর/এমএস