বিমার প্রতি আস্থা ফেরানো প্রধান লক্ষ্য: আইডিআরএ চেয়ারম্যান
গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার মাধ্যমে বিমার প্রতি মানুষের আস্থা ফেরানোই প্রধান লক্ষ্য হবে বলে জানিয়েছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী।
বৃহস্পতিবার আইডিআরএ কার্যালয়ে ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সদস্যদের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।
ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ মাথায় নিয়ে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান পদ থেকে ড. এম মোশাররফ হোসেন পদত্যাগ করলে ১৫ জুন বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসেবে সাবেক সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারীকে নিয়োগ দেয় সরকার।
আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার তিনি প্রথমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাক্ষাতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়- একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আপনি আইডিআরএ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন, এ খাতের প্রতি মানুষের আস্থা সংকটও রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিমা খাতের উন্নয়নে আপনার পরিকল্পনা কি?
এর উত্তরে মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, পলিসিহোল্ডারদের (গ্রাহক) স্বার্থ দেখা আমার প্রথম কাজ। এর মাধ্যমে আস্থা ফিরে আসবে। মানুষ যদি বিমা করে তার সুফলটা পায়, তাহলে একজনের দেখাদেখি আরও ১০ জন আসবে। আর একজন যদি প্রতারিত হয় বা বঞ্চিত হয়, তাহলে ওইটা আরও ১০ জনকে নিরুৎসাহিত করবে। সে কারণে তাদের (গ্রাহক) স্বার্থ আমাদের দেখতে হবে এবং তাদের বোঝাতে হবে আমরা তাদের স্বার্থ দেখছি।
‘এর একটি হবে ডিজিটালাইজেশন। ব্যাংকে আপনি আজকে টাকা জমা দিলে, বোঝেন আপনার টাকা জমা হয়েছে। আপনি এসএমএস পান, ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিয়ে দেখতে পারেন। অনলাইনে আপনি দেখতে পারেন আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কি অবস্থা। এ রকম বিমাখাতেও আমরা ডিজিটালাইজেশন করতে চাই। এ কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। শুরুতে এটা সীমিত আছে। আমরা চাইবো ব্যাংকিং সিস্টেমের মতো একটা অনলাইন সিস্টেমের দিকে যেতে।’
বিমাখাতের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা সংকট ও বিশ্বাসের অভাব আছে বলে স্বীকার করেন আইডিআরএ’র নতুন চেয়ারম্যান জয়নুল বারী।
তিনি বলেন, এখানে (বিমাখাত) ইমেজ সংকট আছে এবং ট্রাস্টের অভাব আছে। আস্থার অভাব থাকলে মানুষ এই সেক্টরের দিকে আসবে না। সরকার এই সেক্টরের উন্নয়নের জন্য আইডিআরএ করেছে। এই সেক্টরের উন্নয়নের জন্য কী কী করতে হবে, আমাদের বিমা উন্নয়ন পলিসিটা কী সেগুলো নিয়ে দেখছি।
‘আমরা প্রত্যাশা করি আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে তিন বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা করবো। এর মধ্যে বিভিন্ন মেয়াদের কাজ থাকবে। কোনটা করতে এক মাস, কোনটা করতে ছয় মাস, আবার কোনটা করতে এক বছর সময় লাগবে। এ রকম একটা পরিকল্পনা করবো আমরা, এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
জয়নুল বারী আরও বলেন, কমপ্লায়েন্সের একটা বিষয় আছে। অনেক কিছু আমরা করেছি, কিন্তু কমপ্লায়েন্স নেই। সেগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে কমপ্লায়েন্স করবো। সেটা করা হবে সবাইকে নিয়ে, যারা আমাদের মেইন স্টেকহোল্ডার আছেন। নিয়ন্ত্রণ মানে এই না আমরা সবকিছু চাপিয়ে দেবো। সবাইকে নিয়ে সবার সমস্যা, সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কাজ করবো।
তিনি আরও বলেন, নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে যাতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটা আমাদের দেখতে হবে। একটা প্রাইভেট সেক্টর তো প্রফিটের জন্য কাজ করে। প্রাইভেট সেক্টর এবং গভমেন্ট সেক্টরের উদ্দেশ্য এক থাকে না। সুতরাং প্রাইভেট সেক্টরের বিষয়টিও আমাদের দেখতে হবে।
সৌজন্য সাক্ষাতে আইডিআরএ’র সদস্য মো. দলিল উদ্দিন, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র এস এম শাকিল আখতার, আইআরএফ সভাপতি গোলাম মওলা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাসুদ মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
এমএএস/জেডএইচ/জেআইএম