কাজ শুরুর আগেই ব্যয় বাড়লো ৬৫১ কোটি, সময় বাড়লো দুই বছর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:১৩ পিএম, ০১ জুন ২০২২

রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকা ঘিরে যানজট নিরসনে নির্মাণাধীন ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ ৯ প্রকল্পে দুই হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এ প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামোগত কাজ শুরুর আগেই নতুন করে ৬৫১ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার টাকা ব্যয় বাড়লো। পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়ও বাড়ছে দুই বছর। ২০১৭ সালে যখন প্রকল্পটি পাস হয় তখন ডলারের দাম ছিল ৮০ দশমিক ৭০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮৯ টাকা।

বুধবার (১ জুন) আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। দুই বছরেরও বেশি সময় পর সশরীরের একনেক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একনেক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, একনেক সভায় প্রায় ২ হাজার ৬৬৫ কোটি ২১ লাখ টাকার ৯ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে।

অন্যদিকে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১৬ হাজার ৯০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। নতুন করে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে সম্পন্ন হওয়ার কথা। নতুন করে মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে জুন ২০২৪ নাগাদ করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ এখনো শেষ হয়নি।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে চীনের ঋণ পেতে দেরি হওয়ায় প্রকল্পটির কাজ শুরু হতে দেরি হয়। মূল প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৯৫১ কোটি ৪১ লাখ এবং চীনা ঋণ ধরা ছিল ১০ হাজার ৯৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৯০৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বেড়ে ৭ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা হচ্ছে। অন্যদিকে, চীনা ঋণ ১ হাজার ২৫৭ কোটি ৮২ লাখ থেকে কমে হচ্ছে ৯ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করে যানজট নিরসন করা।

সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, সফলভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০টি জেলার সহজ সংযোগ স্থাপিত হবে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও হবে যানজটমুক্ত। পাশাপাশি যানজটমুক্ত হবে আবদুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল-চন্দ্রা এলাকা।

অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো

‘রূপকল্প ২০৪১: দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র সঞ্চয় যোজন’ এবং ‘রংপুর জেলাধীন পীরগঞ্জ, হারাগাছ ও বদরগঞ্জ পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘দারুল আরকাম ইবতেদায়ি মাদরাসা স্থাপন ও পরিচালনা’ ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ৫০টি বিজি এবং ৫০টি এমজি যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন’ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘বানৌজা শের-ই-বাংলা পটুয়াখালী স্থাপন (১মং সংশোধিত)’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

‘রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকো’র আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন’ প্রকল্প, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল ইকোনোমিক করপোরেশন ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড ফ্যাসিলেশন সেক্টর ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট অনুমোদন দেওয়া হয়।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশ নেন।

সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এমওএস/এমএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।