বেড়েছে ফার্নিচারের দাম, ঈদের বেচাকেনায় ভাটা

এবারের ঈদকে কেন্দ্র করে ফার্নিচারের চাহিদা নেই। আগে ঈদে মানুষ শখ করে ফার্নিচার কেনাকাট করতো। কিন্তু এবার সেই চাহিদা নেই। রমজান মাসজুড়েই ফার্নিচার বেচাকেনায় ভাটা চলছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
মিরপুর-৬০ ফিটের সাথী ফার্নিচারের প্রোপাইটার সাইফুল আলম খান জাগো নিউজকে বলেন, ঈদে ফার্নিচার বিক্রির অর্ডার নেই। এখন আগেকার অর্ডারের। তুলনামূলক কম দামে বিভিন্ন কোয়ালিটির ফার্নিচার আছে। ফার্নিচার তৈরির কাঁচামালের অনেক দাম। কাঠের দাম বাড়ছে, হার্ডওয়্যারের দাম বাড়ছে।
বেচাকেনা না বাড়লে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে ফার্নিচার তৈরির কাঁচামালের দাম। বিশেষ করে শিপমেন্ট চার্জ ও শ্রমিক। এছাড়া দেশীয় বাজারে কাঠের দাম বেড়েছে। সব মিলিয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে আসবাবপত্র তৈরির খরচ। ব্যবসায়ীরা আশা করেছিল ঈদে বেচাকেনা বাড়বে। অথচ উল্টো আরও কমেছে।
যে কয়েকটি খাত উচ্চ প্রবৃদ্ধির রপ্তানি আয় যোগ করছে আসবাবপত্র প্রস্তুতকারক শিল্প অন্যতম। তবে উদ্যোক্তারা বলছেন, সম্ভাবনা জাগালেও এর সুফল নিতে পারছেন না তারা। কাঁচামাল আমদানিতে তাদের দিতে হয় উচ্চহারে শুল্ক। আর দক্ষকর্মী তৈরিতে নেই সরকারি কোনো উদ্যোগ। খাত বিশ্লেষকদের পরামর্শ, আগামীর বাজার সহজ করতে হবে উন্নত মেশিন ও প্রযুক্তি আমদানির কৌশলও।
এ প্রসঙ্গে অটোবি ফার্নিচারের মার্কেটিং ম্যানেজার মমিনুল আলম পাটোয়ারী বলেন, ঈদে ফার্নিচার বেচাকেনা নিয়ে আমরা হতাশ। একদম সেল নেই বলা চলে। বরং রমজানের আগে বেচাকেনা ভালো ছিল। মানুষ দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ঈদ করবে। সেই জন্য বাজেটগুলো ঈদ কেন্দ্রিক কেনাকাটা ও গ্রামের বাড়ির খরচের জন্য রাখা হয়েছে। ফার্নিচার কেনার বাজেট দেখা যাচ্ছে না।’
দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের ফার্নিচারগুলোর কাঁচামাল সবই চীন থেকে আসে। শিপমেন্ট চার্জ ও কাঁচামালের দাম বেড়েছে। সুতরাং ফার্নিচারের দাম বৃদ্ধি বলতে আমরা সমন্বয় করেছি। এতে করে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দাম বেড়েছে।
অন্য দিকে সম্ভাবনা জাগালেও ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের এ খাতটি এখনো ছুঁতে পারেনি ৮ কোটি ডলারের আয়। বর্তমানে ২৫ লাখের বেশি কর্মসংস্থানের জোগান দিচ্ছে খাতটি। তৈরি পোশাকশিল্পের পরই রয়েছে এ খাত। আসবাবপত্র বেচাকেনা যে কয়েকটি সময়ে হয় তার মধ্যে অন্যতম রোজার ঈদ। কারণ অনেকে ঈদে ফার্নিচার কেনার জন্য একটা বাজেট রেখে দেন। অনেকে বোনাসের টাকা দিয়ে ফার্নিচার কিনেন। অনেকে এখনো বেতন বোনাস পায়নি। ফলে সামনে বেতন বোনাস পেলে বেচাকেনা বাড়বে বলে প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
হাতিল ফার্নিচারের পরিচালক শফিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে বেচাকেনা কম। মূলত ১৫ রোজার পর থেকেই ডাউন। অনেকে এখনো বেতন বোনাস হাতে পাননি। আশা করি দুই একদিনের মধ্যে বেচাকেনা বাড়বে।’
এমওএস/এমএএইচ/এমএস