মধ্যবিত্তের ভরসা বায়তুল মোকাররমের পাঞ্জাবি
ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের আশপাশের ফুটপাতের কাপড়ের বাজার। বিশেষ করে ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার এই এলাকার ফুটপাতের দোকানগুলোতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের সমাগম বাড়ে। এ এলাকার ফুটপাতের দোকানে কম দামে তুলনামূলক ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই এখানে পোশাক কিনতে আসেন। তবে বিক্রেতারা বলছেন, আশানুরূপ ক্রেতা পাচ্ছেন না তারা। এ বছর কাপড়ের দাম বাড়ায় বিক্রি কমে গেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বায়তুল মোকাররমের উত্তর ও দক্ষিণ গেটে গিয়ে দেখা যায়, হরেক রকমের এবং নানা রঙের পাঞ্জাবি কেউ এলোমেলোভাবে আবার কেউ সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন। এখানে প্যান্ট, গেঞ্জিসহ নানা ধরনের পোশাক পাওয়া গেলেও ঈদের আগে মূলত চাহিদা বাড়ে পাঞ্জাবির।
ওই এলাকায় গেলেই কানে ভেসে আসবে হকারকের হাকডাক। ‘হাজারের মাল ৫০০’, ‘শাতশোর মাল ৩০০’- এভাবে ডাকাডাকি করছেন হকাররা। জুমার নামাজ শেষ করেই ছোট ছোট দোকানগুলোতে দাঁড়িয়ে পাঞ্জাবি দেখছেন ক্রেতারা।
একাধিক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। শামসুল নামে এক ক্রেতা বলেন, আমি থাকি ফকিরাপুলে। অল্প বেতনে চাকরি করি। বড় মার্কেটে জিনিসের অনেক দাম। কিন্তু আমাদের তো অত আয় নাই। বেতন বাড়ে না, জিনিসের দাম বেশি। বায়তুল মোকাররম থেকেই কিনি। এবার পাঞ্জাবি কিনতে হবে, তাই ঘুরে ঘুরে দেখছি।
ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে পাঞ্জাবি দেখছেন এক ক্রেতা। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি। মার্কেটের চাইতে এখানে দাম কম। মানে (কোয়ালিটি) হয়তো দামি মার্কেটের মতো হবে না। কিন্তু নতুন একটা জামা বাচ্চাকে দিতে হবে, দাম যাই হোক। সব জিনিসের যে দাম, তাতে মোটামুটি হলেই হলো।
বায়তুল মোকাররম এলাকার একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্ত পাঞ্জাবি বিক্রি করেন তারা। তবে এবার পোশাকের দাম একটু বেশি, ফলে ক্রেতাও কম বলে জানান তারা।
সজীব নামে এক বিক্রয় কর্মী জাগো নিউজকে জানান, এবার কাপড়ের দাম বেশি। আগের বছরগুলোতে যে পাঞ্জাবি তারা ৩০০ টাকায় কিনতেন, তা এবার ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এজন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
এ বছর ক্রেতা সমাগম কেমন জানতে চাইলে সজীব বলেন, বেচাকেনা ভালো না ভাই। কাস্টমার (ক্রেতা) নাই এবার।
করোনার কারণে গেল দুই বছর ব্যবসা করতে পারেননি এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তবে এবার করোনার ভয় কেটে গেলেও ক্রেতার তেমন ভিড় নেই বলে জানান সাইফুল নামে এক পাঞ্জাবি বিক্রেতা।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, অনেকেই আসেন, পাঞ্জাবি দেখে চলে যান। তবে করোনার আগের বছরগুলোতে যেমন ক্রেতা ছিল, এবার তা নাই।
এমআইএস/কেএসআর/জিকেএস