সুদ হার কমিয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা


প্রকাশিত: ০৬:০৪ এএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬

বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতে ব্যাংকিং খা‌তে সুদ হার কমিয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা কর‌ে‌ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে চল‌তি অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন ২০১৬) নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা ক‌রেন গর্ভনর ড. আতিউর রহমান ।

সুদ হার দশমিক ৫০ শতাংশ কমিয়ে রেপোতে ছয় দশমিক ৭৫ এবং রিভার্স রেপোতে চার দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়ে‌ছে। ঘো‌ষিত নতুন মুদ্রানীতী‌তে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হ‌য়ে‌ছে ৬ দশ‌মিক ১ শতাংশ। এছাড়া সতর্ক, সং‌যোত, সমর্থনমূলক নতুন এ নীতিতে আগামী জুন নাগাদ বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ে‌ছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। বেসরকারি খাতের রফতানিমুখী শিল্পের জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত ৫০ কোটি ডলারের দুটি তহবিল থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগের র‌য়ে‌ছে ব‌লে ঘোষণা ক‌রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মুদ্রানীতি ঘোষণা করে ড. আতিউর রহমান বলেন, উৎপাদন ও মূল্য পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমরা সংযত কিন্তু সমর্থনমূলক মুদ্রানীতি ভঙ্গি দিয়ে যাচ্ছি।

এবারে প্রথমত, আমরা মূদ্রানীতিতে সুদহারগুলো কমিয়েছি। বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রেপো এবং রিভার্স রেপো হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে যথাক্রমে ৬.৭৫ ও ৪.৭৫ শতাংশ করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, ব্যাপক মুদ্রা ও বেসরকারি খাতের ঋণ যোগানের প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপিত হয়েছে যথাক্রমে ১৫.০ ও ১৪.৮ শতাংশ। এই লক্ষ্যমাত্রা আগের মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সামান্য কম, তবে প্রকৃত অর্জনের চেয়ে যথেষ্ট বেশি।

এই কমতি নীতি সুদহার, যথাযথ ঋণ যোগান এবং ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে আমাদের এই পলিসি রিক্যালিব্রেশন (নীতি পুনঃসমন্বয়) মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একদিকে কোনো বিঘ্ন ঘটাবে না, অন্যদিকে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য যথেষ্ট হবে বলে আমরা মনে করি। বরাবরের মতো এবারেও আমরা বর্তমানের বাস্তবতা ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা বিবেচনায় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সমন্বয় করতে সদা প্রস্তুত রয়েছি। মাঝপথেও, এই নীতিভঙ্গি পরিবর্তনের সুযোগ অবারিত থাকবে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, ডিসেম্বর মাস শেষে খাদ্য ও জ্বালানি বহির্ভূত কোর মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬.৮ শতাংশ, যা মূল্যস্ফীতিকে ঊর্ধ্বমুখী চাপে রেখেছে। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো চলতি বছরের উচ্চ প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পরিবেশেও আমাদের রফতানি বাড়ছে। বছর শেষে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

বৈদেশিক সূত্রের অর্থায়নসহ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি জুনের ১৩.২ শতাংশ থেকে বেড়ে নভেম্বরে ১৩.৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমানত ও ঋণের সুদহার কমেছে এবং এ দুটি সুদহারের ব্যবধান অর্থাৎ স্প্রেড ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তবে এই স্প্রেড আরো কমানোর জন্য ব্যাংকগুলোকে আমরা তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি।

অভ্যন্তরীণ এবং বহির্বিশ্ব উভয় খাতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে ৬.৮-৬.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং ৬.১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি প্রক্ষেপণ করছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে অর্থবছর শেষে এই প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশও স্পর্শ করতে পারে।

এসআই/এআরএস/আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।