‘অবণ্টিত লভ্যাংশ অপব্যবহারকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৫ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২২
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম

অবণ্টিত লভ্যাংশ অপব্যবহারকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও শেয়ারহোল্ডারদের দাবি মীমাংসাকে কেন্দ্র করে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসার পর থেকে জমা হওয়া অবণ্টিত লভ্যাংশ কোথায় রাখা হয়েছে বা কোথায় ব্যবহার করা হয়েছে, নাকি কেউ নিয়ে গেছে, তা খুঁজে বের করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের নিরীক্ষক দিয়ে এ অর্থ খুঁজে বের করবো। এতে ওই টাকা কোথায় গেছে তা বেরিয়ে আসবে। যে টাকা নিজের না, তা আপনারা (কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট) নিলেন কেন? অন্যের টাকা নিয়ে নিজের বিল্ডিং-বাড়ি বানানোর অধিকার কেউ দেয়নি।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের দাবি মেটানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিনিয়োগকারীরা হয়তো অনেক বছর জানতোই না তাদের পাওনা টাকার বিষয়ে। আজ টাকা পেয়ে তাদের মধ্যে শেয়ারবাজার নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব আসবে। এই বাজারে বিনিয়োগ করলে যে রিটার্ন পাওয়া যায়, তা আজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে বাইরে ম্যাসেজ চলে যাবে। এছাড়া তাদের পাওনা আদায় করে দেওয়ার জন্য যে রেগুলেটর আছে, সেটা তাদের মধ্যে আস্থার তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকার লভ্যাংশ জমে থাকার বিষয়টি যখন আমরা তুলে নিয়ে আসলাম, তখন কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওই লভ্যাংশের পাওনাদার বিনিয়োগকারীদের খুঁজে পাচ্ছে। ঠিক আছে পাক। আমাদের উদ্যোগের ফলে যদি বিনিয়োগকারীরা তাদের পাওনা ফেরত পায়, সেটাও ভালো।

‘এখনো কিছু কোম্পানি থেকে অবণ্টিত লভ্যাংশের হিসাব নেই বলে কমিশনে চিঠি পাঠায়। অনেকেই মাসের পর মাস সময় চেয়েই যাচ্ছেন। তবে ৩১ মার্চের পরে কমিশন কঠোর হবে। এখনো জরিমানা করা শুরু করিনি, তবে শিগগির কমিশন পদক্ষেপ নেবে। আমরা অনেক সময় দিয়েছি ও অপেক্ষা করেছি। চলতি মাসের পরে আর সময় দেওয়া হবে না।’

অবণ্টিত লভ্যাংশের অপব্যবহারকীরদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, চলতি মাসের মধ্যে যদি ওই লভ্যাংশের হিসাব দিতে না পারে বা ফান্ড কোথায় রয়েছে বলতে না পারলে ও স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে স্থানান্তর না করে, তাহলে কমিশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। যা অবণ্টিত লভ্যাংশের থেকে কয়েকগুণ বেশি জরিমানা হবে।

গত সপ্তাহে বাজারে নেতিবাচকতার কারণ হিসেবে শিবলী বলেন, যুদ্ধ বা যে কোনো কারণে হোক, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতংক তৈরি হয়েছিল। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এমন পরিস্থিতি হয়েছে। তবে আমরা স্ট্র্যাটেজিক ও ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে সেই সংকট কাটিয়ে উঠেছি। এ ক্ষেত্রে স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমরা যে উদ্দেশ্যে এই ফান্ড গঠন করেছিলাম, সেটা সত্যিই কাজে লেগেছে। তাই শেয়ারবাজারে ভয়ের কিছু নেই। এই বাজারে বিনিয়োগকারীদের পাশে সরকার থেকে শুরু করে সবাই আছে।

শেয়ারবাজার থেকে কোম্পানির বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পলিসি করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, প্রায় ২০টি কোম্পানি এখন শেয়ারবাজার থেকে বেরিয়ে যেতে চায়। ওইসব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের অর্থ বুঝিয়ে দেবে। যেসব কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিনিয়োগকারীদের অর্থ ২০-৩০ বছর ধরে আটকে আছে।

আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে বন্ড মার্কেট ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি হয় না বলে জানিয়েছি। আমরা এই মার্কেটটাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি। তবে বিনিয়োগ সীমার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়টি সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহযোগিতার জন্য বলেছি, যোগ করেন তিনি।

সিএমএসএফর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও বিএপিএলসির সদ্য বিদায়ী সভাপতি আজম জে চৌধুরী। এছাড়া সিএমএসএফের সিওও মনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এমএএস/আরএডি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।