ভোজ্যতেল-চিনি-ছোলার শুল্ক প্রত্যাহার: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৯ পিএম, ১০ মার্চ ২০২২
ফাইল ছবি

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলার ওপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মন্ত্রী বলেন, ‘জিনিসের দাম যাতে সহনীয় পর্যায় থাকে, সেজন্য যেসব পণ্যের ওপর শুল্ক ছিল, সেগুলো তুলে নিয়েছি।’

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ভার্চুয়ালি এ সভায় অংশ নেন। সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

কোন কোন পণ্যের শুল্ক প্রত্যাহার হয়েছে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। মূলত রমজান মাসে যেসব পণ্য বেশি প্রয়োজন, সেসব পণ্যের শুল্ক প্রত্যাহার হয়েছে। কারণ সবাই এগুলোর ভোক্তা। সয়াবিনের উৎপাদনপর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তাপর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন,‘সরকার থেকে কিনে যে সহযোগিতা করা দরকার, সেটা পূর্ণমাত্রায় করা হয়েছে। পাশাপাশি টিসিবি আমাদের সব সময় লাগে না, এসব প্রয়োজনগুলো সারা বছর লাগে না, মাঝে মাঝে দেখা যায়। তখন সরকারকে ফ্লেক্সিবল থাকতে হয়।’কারণ যখন যেটা প্রয়োজন দেখা দেয়, তখন সেটার জন্য ব্যবস্থা করতে হয়। তাই বলতে পারি, সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, তা করা হচ্ছে।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘যুদ্ধ হচ্ছে, আমরা চিন্তাও করিনি যুদ্ধ লাগবে। এসব ক্ষেত্রে অনেক প্যারামিটার আছে, বেড়ে যায়। জিনিসপত্র থাকলেও এগুলো যেখানে আসার সেখানে আসতে পারে না। ট্রান্সপোর্ট কস্ট বেড়ে যায়। ফলে যে পরিমাণ বাড়ে তার চেয়েও বেশি বাড়ানো হয়। যারা এগুলো আমদানি করেন, তারা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন। এবার যে মেজার নেওয়া হচ্ছে, টিসিবিকে আরও ক্ষমতায়ন করা, তাহলে বাজারে যদি মালামাল থাকলেও যারা সিন্ডিকেট করে তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হবে না।’

টিসিবি বেশকিছু পণ্য কিনবে। কেন কেনা হচ্ছে ও পরিকল্পনা কী- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা টিসিবির জন্য জিনিসপত্র কিনতে যাচ্ছি। টিসিবি আমাদের অর্থনীতির ব্যাংকও। একদিকে আমাদের যেমন পণ্য দরকার, পণ্যের স্টক দরকার। তেমনি এই পণ্যগুলো যারা ব্যবহার করবে তাদের কাছে সময় মতো এবং ন্যায্য মূল্যে পৌঁছানো দরকার। আমরা সে কাজটি করছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টিসিবি করেছিলেন মানুষের কষ্ট যাতে লাঘব হয়। আপনারা জানেন পৃথিবীতে জিনিসপত্রের অভাবে কোনো বিপদ ঘটে না। বিপদ ঘটে তখন যখন বণ্টন পর্যায়ে ব্যত্যয় হয়। সময় মতো যদি বণ্টন করা না যায় তখন আমাদের গুদামে মজুত থাকলেও কোনো লাভ হয় না। এজন্য আমরা মনে করি টিসিবির ভূমিকা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই টিসিবির কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে, বণ্টন ব্যবস্থা আরও বাড়াচ্ছি। প্রতিটা ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবি নিয়ে যাবো। যাতে কোনো গরিব মানুষ কষ্ট না পায়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এক কোটি পরিবারকে টিসিবির আওতায় নিয়ে আসতে যাচ্ছি। সেখানে ভোজ্যতেল থেকে শুরু করে অন্যান্য যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস লাগবে সেসব জিনিস আমরা টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে তাদের কাছ পৌঁছিয়ে দেবো।

মানুষজন কষ্ট পাচ্ছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানুষজন কষ্ট পায় বিভিন্ন কারণে। আমাদের যেসব পণ্যের নিজস্ব উৎপাদন হয় সেটা যদি কম হয়। তখন আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। আমরা যেসব পণ্য ভোগ করি সেটা কম হলে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করে চাহিদা মিটিয়ে থাকি। কিন্তু এখন বিশ্বে যুদ্ধ হচ্ছে। এসব কারলে এগুলো আমাদের হাতের বাইরে। আমরা কখনো চিন্তাও করিনি যুদ্ধ লাগবে। এসময় জিনিস পত্র থাকলেও দাম বেড়ে যায়। যেগুলো আসার কথা সেগুলো আসতে পারে না। এছাড়া পণ্য আনার খরচও বেড়ে যায়। কারণ পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। ফলে জিনিসপত্রের দাম যা বাড়ার কথা তার থেকে আরও একটু বেশি বাড়ে। কারণ আমদানিকারকরা এ সুযোগটা নেওয়ার চেষ্টা করেন। তারা সবসময় এ কাজটি করে আসছেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এবার আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছি টিসিবিকে আরও ক্ষমতায়ন করা। তাহলে বাজারে যদি কোনো মালামাল থাকে, যারা সিন্ডিকেট করে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা সে সুযোগ পাবে না। টিসিবির মাধ্যমে যদি আমরা সময়মতো ডেলিভারি করতে পারি এবং ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারি তাহলে আর এমন হবে না। এবার আমাদের উত্তম প্রস্তাব হলো এক কোটি পরিবারকে সুবিধা দেওয়া হবে। আশা করছি আমরা যেমনভাবে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করেছি, এটিকেও ঠিক সেভাবে মোকাবিলা করবো ইনশাল্লাহ।

আইএইচআর/এএএইচ/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।