সয়াবিন তেল আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার হতে পারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৩ এএম, ০৯ মার্চ ২০২২

রমজান মাস সামনে রেখে দেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। অজুহাত হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিকে সামনে আনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বাজারে তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকা এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারেও বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম।

ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটগুলোর দাবি, জাহাজভাড়া বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে রিফাইনারি কোম্পানিগুলো হঠাৎ করে বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। এজন্যই বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। এ পরিস্থিতিতে রমজান সামনে রেখে নিম্নআয়ের মানুষের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে।

বর্তমানে খুচরা বাজারে এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৮ টাকা, দুই লিটার ২৩৫-৩৪৫ টাকা ও পাঁচ লিটার বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৮০০ টাকা দরে। অনেক দোকানে তেল পাওয়াও যাচ্ছে না। সর্বত্র ভোজ্যতেলের জন্য হাহাকার উঠছে। এ নিয়ে কারসাজির অভিযোগ উঠছে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।

অথচ সাধারণ মানুষ মনে করছে, রপ্তানিকারক থেকে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত সব ব্যয়ভার বহন ও সম্ভাব্য মুনাফা যোগ করেও আরও অনেক কম দামে ভোক্তাপর্যায়ে সয়াবিন তেল সরবরাহ করা সম্ভব। সেজন্য বাজার সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছাকেই যথেষ্ট মনে করছেন তারা।

এদিকে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির এ অনিয়ম ঠেকাতে তেলের গুদামগুলোতে অভিযান চালানো হয়েছে। আগামী শুক্রবার (১১ মার্চ) থেকে রশিদ ছাড়া তেল কেনাবেচা বন্ধ করার কথা জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান।

তিনি জানিয়েছেন, বিপণন ব্যবস্থায় কারও অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। দেশে পর্যাপ্ত ভোজ্যতেল মজুত থাকলেও যারা কৃত্রিম সংকট বানিয়ে দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোজার আগে বাজার স্থিতিশীল রাখতে তেল আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে।

বর্তমানে আমদানি ও উৎপাদন বা ব্যবসায়িক উভয় পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ রয়েছে। সম্প্রতি দুই পর্যায়েই ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রোজার মাসে তেলের মূল্য সহনীয় রাখতে ভ্যাট কাটতির বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। সংস্থাটির ভ্যাট বিভাগ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের অনুরোধ বিশ্লেষণ করছে। রোজার আগে সয়াবিন তেলের দাম সহনীয় রাখতে চলতি সপ্তাহে দেশে ভোজ্যতেল আমদানির ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক তথা ভ্যাট) প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে পারে সংস্থাটি।

এ বিষয়ে এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক সৈয়দ এ মুমেন জাগো নিউজকে বলেন, আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট কমানোর বিষয়ে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ কাজ করছে। কোনো সিদ্ধান্ত এলে তা এনবিআরের ওয়েবসাইটে জানানো হবে।

গত বছরের ১১ এপ্রিল সয়াবিন ও পাম তেল আমদানিতে ৪ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার করেছিল এনবিআর।

এসএম/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।