রডের দামে স্থিতিশীলতায় স্ক্র্যাপ জাহাজে আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১২ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২

নির্মাণসামগ্রীর অন্যতম প্রধান উপকরণ রডসহ লৌহজাতীয় সামগ্রীর ঊর্ধ্বমুখী দামে দেশের আবাসন শিল্প ও উন্নয়ন প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ও রডসহ অন্যান্য লৌহজাত পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে স্ক্র্যাপ জাহাজের আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ)।

রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ এ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।

ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডির অ্যাসোসিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতারা এদিন তাদের এ দাবি পেশ করেন।

এনবিআরের কাস্টমস সদস্য (শুল্কনীতি) মাসুদ সাদিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানা ও সদস্য (আয়কর নীতি) সামস উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

স্ক্র্যাপ জাহাজের আন্তর্জাতিক বাজার দর টনপ্রতি ৩৫০ ডলার থেকে ৬৩০ ডলারে বেড়েছে বলে সভায় জানান বিএসবিআরএ সভাপতি মো. আবু তাহের।

তিনি বলেন, ডলারের মূল্য ৮৫ টাকা থেকে ৮৮ টাকা হয়েছে। ফলে টনপ্রতি রডসহ অন্যান্য লৌহ সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশের অবকাঠামো বিনির্মাণ খাতের ওপর।

তিনি আরও বলেন, রডসহ লৌহ জাতীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে স্ক্র্যাপ জাহাজের আমদানি শুল্ক টনপ্রতি ১৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা নির্ধারণের জন্য অনুরোধ করছি। একইসঙ্গে সরবরাহ পর্যায়ে প্রতি টন রডের ওপর প্রযোজ্য মূসক ১০০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, এ প্রস্তাবনা বিবেচনায় নিলে রডের বাজার স্থিতিশীল হবে।

এসময় এনবিআরের কাস্টমস সদস্য (শুল্ক নীতি) মাসুদ সাদিক বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন।

সভায় বিএসবিআরএ-এর সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, পুরোনো জাহাজের সঙ্গে আসা লুব ওয়েলের শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে। সমুদ্রগামী জাহাজ স্ক্র্যাপ ঘোষণার পর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছাতে স্বল্প পরিমাণ তৈল জাতীয় পদার্থ থাকাটা স্বাভাবিক। জাহাজে কয়েক রকমের তৈল পাওয়া যায়। যার মধ্যে ফার্নেস অয়েল, লুব অয়েল ও ডিজাইন অয়েল প্রভৃতি। দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের না জানিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সাধারণ বিজ্ঞপ্তি নং-৫৫ এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে ব্যবহৃত লুব অয়েলের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ অবচয় সুবিধা প্রত্যাহার করে নতুন এবং পুরোনো লুব অয়েলের জন্য একই হারে শুল্ক আদায় করছে। যা দিয়ে তৈল জাতীয় পদার্থ বিক্রি করে পরিশোধিত শুল্কের টাকা উঠে না।

এ অবস্থায় সাধারণ বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে পোড়া মবিল ও তৈল বর্জ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

আলোচনায় বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশি পতাকাবাহী স্থানীয় মালিকানাধীন জাহাজে বিদেশে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে প্রাপ্ত পরিবহন ভাড়ার ওপর উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানায়।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এ এস এম আব্দুল বাতেন বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রগামী জাহাজ পরিবহনের ব্যবসা সম্প্রসারণে ও বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে পরিবহন ভাড়ার ওপর প্রযোজ্য ৫ শতাংশ উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানাই। একইসঙ্গে নতুন সমুদ্রগামী জাহাজ কেনার ক্ষেত্রে ১ শতাংশ অগ্রিম আয়কর মওকুফের প্রস্তাব করছি।

এছাড়া জাহাজ ব্যবসা থেকে বৈদেশিক ভাড়ার ওপর ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তার সুবিধা চালু করার দাবি জানায় বিএসবিআরএ। পাশাপাশি বাংলাদেশি জাহাজের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া আরও সহজ করার দাবিও জানানো হয়।

এসএম/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।