বরিশাল-পায়রা বন্দর রেললাইন: সমীক্ষাই চলছে ২০১৬ থেকে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১০ পিএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ফাইল ছবি

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করে ২০২২ সালের জুন নাগাদ করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের এ প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪৯ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকাই খরচ করা হবে পরামর্শক সেবায়।

এছাড়া বিজ্ঞাপনে ৮ লাখ, গাড়িভাড়ায় ৩৩ লাখ ১৫ হাজার, অফিস স্টেশনারি ও অন্যান্য খরচ ৮ লাখ, সম্মানী ৮ লাখ, ভ্রমণ ভাতা ৪ লাখ এবং প্রকল্প ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের (পিএমইউ) জন্য অফিস উপকরণে ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করা হবে।

২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া এ প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে ছয় মাস সময় বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবার প্রথম সংশোধনীতে এর মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়িয়ে করা হয় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এখন নতুন করে আবারও ২০২২ সালের জুন নাগাদ করা হলো।

‘বিশদ নকশা প্রণয়ন ও দরপত্র দলিল প্রস্তুতসহ ভাঙ্গা জংশন (ফরিদপুর) থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা (প্রথম সংশোধন)’ নামের প্রকল্পটি রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

কিছু শর্তসাপেক্ষে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে। শর্তগুলো হচ্ছে- প্রকল্পটি আবশ্যিকভাবে জুন ২০২২ এর মধ্যে সমাপ্ত করতে হবে। প্রকল্পটির অনুমোদিত খাত ও ব্যয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে শুধু পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত বকেয়া বিল পরিশোধ ব্যতীত অন্য কোনো খাত থেকে অর্থ ব্যয় করা যাবে না। প্রকল্প সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্পের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিতকরণের বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে আরও সতর্ক থাকতে হবে ।

পায়রা সমুদ্রবন্দর ও কুয়াকাটাসহ বরিশাল বিভাগীয় সদর ছাড়াও পটুয়াখালীকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ধীরলয়ে এগুচ্ছে। প্রকল্পটির আওতায় পায়রা বন্দর থেকে আরও ২৪ কিলোমিটার লাইন নির্মাণের মাধ্যমে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনানুযায়ী সম্ভাব্যতা সমীক্ষাসহ জরিপ ও পথ নকশা নির্ধারণের কাজ শুরু হয়েছে।

এ লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য বাড়তি ব্যয় বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ রেললাইন নির্মিত হলে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাইলফলক স্থাপিত হবে। পাশাপাশি রেল যোগাযোগ না থাকার অমর্যাদাকর গ্লানি থেকেও মুক্তি পাবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত প্রস্তাবিত সিঙ্গেল লেন ব্রডগেজ রেলপথে মোট ১১টি স্টেশনের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত ফরিদপুর বরিশাল-কুয়াকাটা রেলপথে ভাঙ্গায় মূল জংশন থেকে টেকেরহাট, মাদারীপুর, গৌরনদী, বরিশাল বিমানবন্দর, বরিশাল মহানগর, বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালী, আমতলী,পয়রা বিমানবন্দর ও পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটা স্টেশনে গিয়ে শেষ হবে।

প্রস্তাবিত ঐ রেলপথ নির্মাণে একশ মিটার প্রশস্ত ২১১ কিলোমিটার দীর্ঘ ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার রেলপথ এরইমধ্যে চালু হয়েছে। অপর একটি লাইন পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় এবং আরেকটি লাইন ভাটিয়াপাড়া-কালনা-নড়াইল-যশোর হয়ে খুলনা ও বেনাপোল লাইনে সংযুক্ত হবে।

এমওএস/এসএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।