পোশাক শিল্প নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে


প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ০৫ জানুয়ারি ২০১৬
ফাইল ছবি

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, দেশের তৈরি পোশাক শিল্প নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। এর ধারাবাহিকতায় আমাদের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করেছে বিদেশিরা। আমরা সব ধরনের অপতৎপরতা মোকাবেলা করতে সক্ষম। তাই কোনো ষড়যন্ত্রই এ শিল্পের অগ্রযাত্রা থামিয়ে রাখতে পারবে না।

‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পখাতে বিপদ ও পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবেলা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক প্রসেস সেফ্টি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম স্যাম মান্নান।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশে তৈরি পোশাক শিল্পের বিস্ময়কর উত্থান প্রতিযোগীদের জন্য ঈর্ষার কারণ হয়েছে। তাই আমাদের রফতানি প্রবৃদ্ধি ঠেকাতে প্রতিযোগীরা তৎপর রয়েছে। রানা প্লাজা ধস ও তাজরীন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর এ বিষয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা আরো বেড়েছে। ঘটনা দুটির পর ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দু’টি সংগঠন অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্তারোপ করেছিল। তারা গার্মেন্টস শিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদার, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, শিল্প কারখানা পরিদর্শন ও মনিটরিং জোরদারসহ বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়েছিল।

কমপ্লায়েন্স সম্পর্কিত এসব শর্ত পূরণে তৈরি পোশাক মালিক, বিজিএমই, বিদেশি ক্রেতা সংগঠন, দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে। পাশাপাশি আমাদের সরকারও পোশাক শিল্পের অভ্যন্তরীণ কর্মপরিবেশ উন্নতি, শ্রমিকদের জীবনের ও স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা, অগ্নিনির্বাপন, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে। এরপরও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের জন্য জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল করা হয়নি। তবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প থেমে থাকেনি। আমাদের সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টায় এ খাতে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে এবং থাকবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যে আমরা তৈরি পোশাক শিল্পখাতে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছি।

আমির হোসেন আমু বলেন, তৈরি পোশাক বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাত। রফতানি আয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মূল্য সংযোজন ও জনগণের জীবন মানোন্নয়নে এ শিল্পখাতের ব্যাপক অবদান রয়েছে। তৈরি পোশাক রফতানিতে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। এ দেশের টেক্সাইল ও গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো রফতানি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে দৃঢ় রেকর্ডের অধিকারী। ২০১৪- ২০১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের রফতানি আয় হয়েছে ৩০ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ২৪ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এসেছে পোশাক শিল্পখাত থেকে।

বর্তমানে দেশের গার্মেন্টস শিল্প কারখানাগুলোতে ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করছে। এর ৮০ শতাংশই নারী। এটি বাংলাদেশে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করছে।

সেমিনারের আইইবি’র কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. মোসাদ্দেক হোসেনের সভাপতিত্বে আইইবি’র প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. কবির আহমেদ ভূঁইয়া, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ প্রতিনিধি, গার্মেন্টস্ শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসআই/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।