হোমটেক্সে অভিযান, ১৪১ কোটি টাকার গোপন বিক্রি তথ্য উদ্ঘাটন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২৯ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা রাজধানীর ইসলামপুরে ক্লাসিক্যাল হোমটেক্স ইন্ডাটিজ লিমিটেডে অভিযান চালিয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ১৪১ কোটি টাকার ভ্যাটযোগ্য বিক্রয় মূল্য গোপন করেছে। এই গোপন করা বিক্রয়মূল্যে প্রায় ৬ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।

নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, গোপন সংবাদে জানা যায়- ক্লাসিক্যাল হোমটেক্স ইন্ডাটিজ লিমিটেড প্রকৃত সেবার তথ্য বিক্রি গোপন করে চালান ব্যতীত সেবা সরবরাহ করে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে। এই খবরের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে গত ২৪ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে গোয়েন্দা দল দেখতে পায়- প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের আওতাধীন কোতয়ালী বিভাগের আরমানিটোলা ভ্যাট সার্কেলে কম রাজস্ব পরিশোধ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

তিনি বলেন, পরিদর্শনের শুরুতে কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করে। তবে প্রতিষ্ঠানের এমডি মো. শামীম হোসাইন ভ্যাট কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুসারে ভ্যাট দলিল উপস্থাপন করতে পারেননি। এছাড়া সেবার বিপরীতে সেবার কোনো মূল্য তালিকা নেই; প্রতিষ্ঠানে কোনো ভ্যাট চালান ইস্যু করা হয় না এবং ওইসব সেবার স্বপক্ষে কোনো তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না।

এরপর প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে এবং প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারে ধারণ করা তথ্য যাচাই করে সেবা বিক্রি সংক্রান্ত বাণিজ্যিক দলিলাদি জব্দ করা হয়। সেখানে পাওয়া তথ্যে ভ্যাট দলিলাদির সঙ্গে ব্যাপক অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়।

তদন্ত অনুসারে, ২০১৭ সালে মে মাস থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ২০০ কোটি ৬৭ লাখ ৮২ হাজার ৮২২ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় ভ্যাট সার্কেলে মাসিক রিটার্নে সর্বমোট ৭৬ কোটি ৮৫ লাখ ৩২ হাজার ৩৩১ টাকা বিক্রিয় হিসাব প্রদর্শন করেছে। রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ১৪০ কোটি ৯৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৯ টাকা। প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮ হাজার ৮৫৭ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। এই ফাঁকির ওপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাসভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৭৮ হাজর ৪৯৩ টাকা বিলম্বজনিত সুদ হিসেবে প্রযোজ্য হবে।

উল্লেখ্য, সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটির ছয়টি শাখা আছে। প্রতিষ্ঠানটি মূলতঃ বেডশিট, কম্ফোর্টার, কম্বল ও অন্য হোম টেক্সটাইল সামগ্রী তৈরি ও বিক্রি করে। নতুন ভ্যাট আইন অনুসারে পোশাকের ওপর ৭.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য।

তিনি আরও বলেন, তদন্তে পাওয়া ফাঁকি দেওয়া ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হয়েছে।

এমএএস/এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।