সূচকের বড় উত্থান, বেড়েছে লেনদেন
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপরটি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন লেনদেন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই শেয়ারবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে বৈঠকে বসে অর্থ মন্ত্রণালয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং শেয়ারবাজার কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকি কমিটির আহ্বায়ক মফিজ উদ্দীন আহমেদ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বহুল প্রতীক্ষিত এই বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতবিরোধের মধ্যে এই বৈঠকের সংবাদে গত কয়েক দিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে শেয়ারবাজার। আর মঙ্গলবার বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই শেয়ারবাজরে সূচকের বড় উত্থানের আভাস পাওয়া যায়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে যখন বৈঠক শুরু হয় সে সময় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৭৩ পয়েন্ট। এরপর সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমলেও বৈঠক শেষ হওয়ার পর পরই আবার সূচক বাড়ার পালে হাওয়া বয়। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭০ পয়েন্ট বেড়ে সাত হাজার ৪৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবসের উত্থানে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়লো ৩৪৭ পয়েন্ট।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ১৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৬৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৭৪ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৯টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৩৩১ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮৮৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এ হিসেবে এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৪৪৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩০ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওয়ান ব্যাংকের ১০০ কোটি ১১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৩ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জিএসপি ফাইন্যান্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- পাওয়ার গ্রিড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অ্যাকটিভ ফাইন, আইএফআইসি ব্যাংক এবং জিপিএইচ ইস্পাত।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২০৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২১০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬১টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মতবিরোধের মধ্যে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টাজুড়ে বৈঠক করে শেয়ারবাজার কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকি কমিটি।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং শেয়ারবাজার কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকি কমিটির আহ্বায়ক মফিজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে বহুল প্রতীক্ষিত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং কী ধরনের সিদ্ধান্ত এসেছে তা নিয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা কোনো কথা বলেননি।
বৈঠক শেষে অতিরিক্ত সচিব মফিজ উদ্দীন আহমেদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের কাছে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চান। এ সময় তিনি বলেন, বৈঠকের বিষয়ে নাহিদ ভাই (আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. নাহিদ হোসেন) কথা বলবেন।
এরপর সাংবাদিকরা যুগ্ম সচিব নাহিদ হোসেন এবং অতিরিক্ত সচিব মফিজ উদ্দীন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কথা বলতে চাননি।
এমএএস/কেএসআর/এএসএম