নিয়ন্ত্রকদের সক্ষমতা ও সমন্বয়হীনতার অভাবে ই-কমার্সে বিশৃঙখলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৪ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকার, প্রতিযোগিতা কমিশনসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাব ও সমন্বয়হীনতার কারণে ই-কমার্স খাতে বিশৃঙখলা সৃষ্টি হয়েছে বলে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বিদ্যমান আইনে প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন তারা।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির “ই-কমার্স খাতের চ্যালেঞ্জ: সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট ও করণীয়” শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এ অভিমত উঠে আসে।

এতে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এখানে খুবই স্বল্প আয়ের লোকজন বিনিয়োগ করেছে। তারা তাদের সঞ্চয় হারিয়েছে। এ অর্থ ফেরত পাবে কি না, তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, ই-কমার্সের পুরো সুনাম এখন ধ্বসের মুখে। বিভিন্ন খাত থেকে আমরা জানতে পেরেছি, ই-কমার্সে ব্যবসা অনেকে কমেছে। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

চালডালের ফাউন্ডার ও সিইও ওয়াসিম আলিম বলেন, যেসব অর্ডারগুলো নন ক্যাশ অন ডেলিভারি সেগুলোতেই বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে। বায়ারদের টাকা নিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান প্রোডাক্ট দেয়নি। এরকম সঙ্কট আরও অনেক খাতেই আছে। ফ্ল্যাটের টাকা নিয়ে ফ্ল্যাট না দেওয়ার চিত্রও আমরা দেখছি। আমি মনে করি, এটা শিগগিরই ঠিক হয়ে যাবে।

বিডি জবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর বলেন, ভোক্তা অধিকারকে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। নতুন আইন হলেও তা যদি সঠিকভাবে মনিটরিং না করা হয়, তাহলে খুব বেশি উপকার হবে না।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার ধ্বসের মতো ই-কমার্সের স্ক্যামের ঘটনা ঘটেছে। গত এক বছরে প্রায় ১০ লাখ মানুষের ১০ কোটি টাকার মতো ব্যাংকে ট্রানজেকশন হয়েছে। এর মধ্যে হয়তো তারা চার থেকে পাঁচ কোটি টাকার প্রোডাক্ট অথবা রিফান্ড পেয়েছে। বাকি টাকা কোম্পানিগুলোর কাছে আটকে আছে। এটা অনেক বড় অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করছে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে হয়তো আমরা এর প্রভাব দেখতে পারবো।

ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহিদ তমাল বলেন, এ ধরনের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আরেকজনকে দিয়েছে। তাদের কাছে টাকার ঘাটতি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে কার কাছে কত টাকা আটকে আছে, সেটি পরিষ্কার না।

তিনি আরও বলেন, ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আগেই এ খাতের সমস্যা সমাধানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ডিজিটাল মনিটরিং পদ্ধতি চালু, উপদেষ্টা ও কারিগরি কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়। তবে আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

ওয়াহিদ তমাল আরও বলেন, এ খাতের জন্য নতুন আইন করলে তা কার্যকর করতে সময় লাগবে। বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করে কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়, সেদিকেই আগে নজর দেওয়া দরকার।

অনুষ্ঠানে আইনজীবী তানজীব উল আলম বলেন, কোনো সঙ্কট তৈরি হলেই নতুন আইনের কথা বলা হয়। এ খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন আইনের প্রয়োজন নেই। বিদ্যমান আইনে প্রায়োগিক দুর্বলতা আছে, সেগুলো বের করা দরকার।

তিনি বলেন, যেহেতু এ খাতের কেউ নতুন করে আইন চায় না, ফলে আগ বাড়িয়ে নতুন করে কোনো আইন কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করা সরকারের উচিৎ হবে না।

এসএম/এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।