‘গ্যাস সংকটে ৪০ শতাংশ টেক্সটাইলে উৎপাদন বন্ধ’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫১ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

দেশে গ্যাস সংকটের কারণে টেক্সটাইল কারখানার গড়ে ৪০ শতাংশ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।

সংগঠনটির অভিযোগ, এখন গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। ফলে যেসব টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনের মাধ্যমে পরিচালিত, তাদের উৎপাদন কার্যত বন্ধ। রপ্তানি আয়ও আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। অবিলম্বে সব কারখানায় এলএনজির মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। গ্যাস সংকটের ওপর এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিটিএমএ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্পিনিং, উইভিং ও ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিলের অধিকাংশই ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। যেখানে মূল জ্বালানি হিসেবে গ্যাসই অন্যতম। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ, সাভার, ধামরাই, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের কিছু কারখানায় গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে তথা ১ দশমিক ৫০ পিএসআইয়ে নেমে গেছে। ফলে ওই মিলগুলো স্থাপিত মেশিনারিজ ক্ষমতার ৭০ শতাংশের ঊর্ধ্বে বন্ধ রাখতে হয়েছে।’

এর আগে স্থিতিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে তা উত্থাপন করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমাধান করা হয়েছে জানিয়ে বিটিএমএর সভাপতি বলেন, ‘এবার সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গ্যাস সংকটের বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অথচ এর কারণে এ সেক্টরটি সম্পর্কে সাধারণ জনগোষ্ঠীসহ সব মহলে এক ধরনের নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

তিনি আরও বলেন, ‘সুতার দাম সহনীয় পর্যায়ে রেখে আমরা তৈরি পোশাকখাতে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছি। কিন্তু আমরা আশঙ্কা করছি, গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে দেশের সার্বিক রপ্তানি বাণিজ্যে। এর মধ্যে রপ্তানি আয়ের সিংহভাগই অর্জিত হয় টেক্সটাইল ও ক্লথিং সেক্টর থেকে। ফলে এ খাতটি পরিচালনার জন্য যেসব উপাদান দরকার, তার মূল হলো গ্যাস। এটির স্বাভাবিক সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনের মাধ্যমে পরিচালিত কারখানাগুলো সম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড মেশিনের ব্যবহার হয়। ফলে গ্যাসের পর্যাপ্ত এবং অব্যাহত সরবরাহ না থাকায় প্রতিনিয়ত মেশিনারিজ এবং স্পেয়ার পার্টসের ক্ষতি হচ্ছে, উৎপাদনও সর্বনিম্ন পর্যায়ে। আমরা প্রধানমন্ত্রীসহ জ্বালানি উপদেষ্টা ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে এলএনজি আমদানির ব্যবস্থা করেছেন।’

‘টেক্সটাইল খাতে অব্যাহত এবং নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি প্রাধান্য দিতে অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় কারখানা মালিকদের পক্ষে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও ব্যাংক ঋণের নিয়মিত কিস্তি পরিশোধসহ ইউটিলিটি বিল ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ সম্ভব হবে না’ বলেও উল্লেখ করেন বিটিএমএ সভাপতি।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএর সহ-সভাপতি ফজলুল হক, পরিচালক ইশতিয়াক আহমেদ, মোশারফ হোসেন, ইশতেহাক আহমেদ সৈকত, রাজিব হায়দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএমএ/এএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।