খাদ্যশস্যসহ পচনশীল ৬৩ পণ্য দ্রুত খালাসে বিধিমালা
খাদ্যশস্য, জীবন্ত পশু, পাখি ও প্রাণীসহ পচনশীল ৬৩ ধরনের পণ্যের আমদানি-রফতানিতে শুল্কায়নসহ সব কর্মকাণ্ড দ্রুত শেষ করতে বিধিমালা চূড়ান্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ফলে আমদানি ও রফতানিতে গতি আসবে বলে মনে করছে রাজস্ব বোর্ড।
নতুন বিধিমালাটি পচনশীল পণ্য দ্রুত খালাস ও নিষ্পত্তিকরণ বিধিমালা-২০২১ নামে অভিহিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত এক আদেশে চূড়ান্ত বিধিমালা জারি করা হয়েছে। নতুন বিধিমালা অনুসারে পচনশীল পণ্য দ্রুত খালাস করতে প্রতিটি কাস্টমস হাউসকে আলাদা করে অনধিক পাঁচ সদস্যের একটি গ্রুপ গঠন করতে হবে। এই কর্মকর্তারা পচনশীল পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। তারা চাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউসের কমিশনারের অনুমতিক্রমে নির্ধারিত অফিস টাইমের বাইরে গিয়েও পণ্য খালাস করতে পারবেন। এই পণ্য চালান সম্পর্কে কোনো বিশেষ সংবাদ বা আমদানি নিষিদ্ধ বা মিথ্যা ঘোষণা না থাকলে, সর্বোপরি সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী ঠিক থাকলে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পচনশীল পণ্যের শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
৬৩ ধরণের পণ্যগুলো হলো- জীবন্ত পশু, পাখি ও প্রাণী, জীবন্ত হাঁস, মুরগি ও পার্কি, জীবন্ত বা তাজা ও হিমায়িত মাছ, মাছের পোনা, জীবন্ত মালাস্কাস, ইস্ট, জীবিত গাছপালা ও চারা, মাশুরুম, তাজা ফুল, তাজা ফল, তাজা ক্যাপসিক্যাম, কাঁচা রাবারম, কুল বা বরই, খেজুর, তামাক (প্রক্রিয়াজাত নয়), তেলবীজ, আলুবীজসহ সব ধরনের বীজ; খাদ্যশস্য ও শস্য, ডাল, ছোলা; চিনি, বিট লবণ, সাধারণ লবণ ও টেস্টিং সল্ট; দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, হিমায়িত ও প্রক্রিয়াজাত মাংস, হাঁস-মুরগির ডিম, চকলেট, বিস্কুট, সেমাই, চিপস, নুডলস, চানাচুর, আচার, শুঁটকি, চা-পাতা, কফি, সুপারি, নারকেল, ঘি, বাটার অয়েল, গুড়, বাদাম, সার, কাঁচা চামড়া, পান, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আদা, কাঁচা হলুদ, তাজা ও হিমায়িত শাকসবজি, তেঁতুল, তালমিসরি, সয়াবেরি ডি, কিসমিস, অনধিক ছয় মাস মেয়াদযুক্ত সব খাদ্যদ্রব্য ও প্রসাধন সামগ্রী; ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল এবং ভোজ্য তেল।
বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোনো আমদানিকারক বা রফতানিকারক চাইলে কোনো সিস্টেমে ২৪ ঘণ্টাই বিল অব অ্যান্ট্রি সাবমিট করতে পারবেন।
নতুন বিধিমালার ফলে আগে এই সংক্রান্ত যত আইন রয়েছে এটি কার্যকর হওয়ার পর রহিত হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে এই বিধিমালার আলোকে পচনশীল পণ্য আমদানি-রফতানির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। কোনো আমদানিকারক যদি নির্ধারিত সময় পণ্য খালাস না করেন, সেক্ষেত্রে একজন উপকমিশনার পদ মর্যাদার কর্মকর্তা নিলাম বা ধ্বংস করার বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন।
বিধিমালায় আরও বলা হয়, কায়িক পরীক্ষা বা নন-ইন্ট্রুসিড ইনশপেকশনের জন্য নির্বাচিত পণ্য চালানগুলোর ক্ষেত্রে মান, পরিমাণ বা অন্যান্য জিজ্ঞাসা থাকলে ইনশপেকশন অ্যাক্ট নামক অংশে লিপিবদ্ধ করে সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রেরণ করবে। এছাড়া পরিবীক্ষণের ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠাতে হবে। তবে সংশ্লিষ্ট কমিশনারের অনুমতি সাপেক্ষে এই সময় বাড়ানো যেতে পারে বলেও খসড়ায় বিধিনালায় বলা হয়েছে। এছাড়া জব্দ করা পণ্য বা আটককৃত যেমন- চিনি, লবণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অথরিটি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সঙ্গে সমন্বয় করে মূল্য নির্ধারণ পূর্বক বিক্রয় বা হস্তান্তর করা যাবে।
এসএম/ইএ/এএসএম