বাজার মূলধনে যোগ হল আরও ৬ হাজার কোটি টাকা
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এই বিধিনিষেধের মধ্যে বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। এতে লকডাউনের আট সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসই শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। সেই সঙ্গে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৮ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ২ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার ২০৪ কোটি টাকা।
আগের সাত সপ্তাহেও বড় অঙ্কের মূলধন বাড়ে বাজারটিতে। আগের সাত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ৪৩ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে লকডাউনের আট সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ল ৪৯ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬৭ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের সাত সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৭৩১ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট। অর্থাৎ টানা আট সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ল ৭৯৮ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১১ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫২ শতাংশ।
অপরদিকে ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহে বেড়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ৮ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১২ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৬ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচকের উত্থানের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৯২টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩০টির। আর ৪৯টির দাম অপরিবর্তিত।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৩০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বা ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১০ হাজার ২৫৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৭ হাজার ৬৮৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ২ হাজার ৫৭৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বা ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, ইফাদ অটোস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, নর্দান ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, এবি ব্যাংক, কনফিডেন্স সিমেন্ট, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এবং গ্রীণ ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স।
এমএএস/জেএইচ/জিকেএস