পুরাতন চাল বাড়তিই, কম দামে মিলছে নতুন চাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪৭ পিএম, ২২ মে ২০২১

বাজারে চালের সরবরাহ বাড়লেও আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পুরাতন চাল। তবে পুরাতন চালের তুলনায় কেজিতে ছয় থেকে আট টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে নতুন চাল। অবশ্য ব্যবসায়ীরা বলছেন- কিছুদিনের মধ্যে পুরাতন চালের দামও কিছুটা কমে আসতে পারে।

শনিবার (২২ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পুরাতন মিনিকেট ও নাজিরশাল চাল আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৭০ টাকা কেজি। তবে নতুন আসা মিনিকেট ও নাজিরশাল চাল ৫৮ থেকে ৬২ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

একই ভাবে মাঝারি মানের পুরাতন পাইজাম ও লতা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা। আর নতুন আসা পাইজাম ও লতা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। অপরদিকে গরিবের মোটা চাল পুরাতনটা আগের মতোই ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে নতুন আসা মোটা চাল ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে নতুন আসা চাল কম দামে পাওয়া গেলেও এর মান ভালো না। নতুন চাল স্বাদে, মানে সবদিক থেকেই পুরাতন চাল থেকে পিছিয়ে রয়েছে। নতুন চাল রান্না করলে ভাতে বাড়ে না এবং নরম হয়ে দলা বেঁধে যায়। যে কারণে এই চালের প্রতি মানুষের চাহিদা কম।

তারা আরও বলছেন, এখন দিন যত যাবে বাজারে চালের সরবরাহ বাড়তে থাকবে। নতুন চালে এখন যে সমস্যা দেখা যাচ্ছে, কিছুদিন পর সেই সমস্যা থাকবে না। তাই পুরাতন চালের দামও সামনে কমে আসবে।

এদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর বাজারগুলোতে সরু, মাঝারি ও মোটা সব ধরনের চালের দাম কমেছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, মাসের ব্যবধানে মিনিকেট ও নাজির চালের দাম ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ কমে কেজি ৫৫ থেকে ৬৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের দাম ৬ দশমিক ১২ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা। আর মাঝারি মানের চালের দাম ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা।

চালের দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. আফজাল বলেন, পুরাতন চালের দাম এক টাকাও কমেনি। তবে নতুন চাল কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। তবে নতুন এই চালের মান খুব একটা ভালো না।

তিনি বলেন, রশিদের ২৫ কেজির বস্তা নতুন মিনিকেট চাল এখন আমরা সাড়ে ১৪০০ টাকা বিক্রি করছি। তবে পুরতান চালের বস্তা আগের মতোই ১৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। একই ভাবে নতুন খোলা মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে এবং পুরাতন মিনিকেট ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

চালের দামের বিষয়ে প্রায় একই ধরনের কথা বললেন খিলগাঁও তালতলার ব্যবসায়ী মো. জানে আলম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, পুরাতন চালের দাম এখনো কমেনি। তবে কিছুদিনের মধ্যে পুরাতন চালের দাম কমে আসবে। কারণ, এখন নতুন চাল কেজিতে ছয় থেকে আট টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। সামনে বাজারে চালের সরবরাহ আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, এখন যে নতুন চাল আসছে এর মান কিছুটা খারাপ। এই চাল ভাতে তেমন বাড়ে না। আবার একটু এদিকে ও দিকে হলেও ভাত হেলা (নরম) হয়ে যায়। আবার স্বাদও কম। এ কারণে নতুন চালের প্রতি মানুষের আগ্রহ কম। তবে আর কিছুদিন পর এই অবস্থা থাকবে না। কারণ এখনকার চালই কিছুদিন পর পুরাতন হয়ে যাবে।

বাবু বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী নাজিমউদ্দিন বলেন, বাজারে এখন পুরাতন চাল খুব বেশি নেই। যে চাল আছে তা আমাদের বেশি দাম দিয়ে কেনা। আমরা নিশ্চয় লোকসান দিয়ে চাল বিক্রি করব না। নতুন চাল কম দামে কিনতে পারছি, সে কারণে বিক্রিও করছি কম দামে। পুরতান চাল কম দামে কিনতে পারলে, আমরা কম দামে বিক্রি করবো।

তিনি বলেন, মান ভালো হোক বা খারাপ হোক চালের দাম কমেছে এটাই ভালো সংবাদ। কিছুদিন আগে তো বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েও চালের দাম কমানো যাচ্ছিল না। এখন যেহেতু চালের দাম কমা শুরু হয়েছে, সুতরাং সামনে দাম আরও কমবে বলে আমাদের ধারণা।

এমএএস/এমআরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।