একদিনে ওয়ালটনের দাম বাড়ল ২১৯০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২৭ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০

একদিনে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ২ হাজার ১৯০ কোটি টাকার ওপরে।

শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার প্রথম লেনদনের শুরু হওয়ার সময়ও বড় দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার পর চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়।

লেনদেন শুরুর প্রথম আট কার্যদিবসেই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে হল্টেড হয়। এতে আট কার্যদিবসেই ১০ টাকা দামের একটি শেয়ারের দাম ৮৭৪ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠে।

এরপরও প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। দফায় দফায় দাম বেড়ে ৬ অক্টোবর এক হাজার টাকায় পৌঁছায়। এরপরই পতনের মধ্যে পড়ে। টানা পতনের কারণে ২৮ অক্টোবর ৬৩৭ টাকায় নেমে আসে।

এরপর ছোটখাটো উত্থান-পতন হলেও ৩০ নভেম্বর থেকে শেয়ারে দাম টানা বাড়তে থাকে। দফায় দফায় দাম বেড়ে ২০ ডিসেম্বর প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ হাজার ৭৪ টাকায় ওঠে। অবশ্য পরের তিন কার্যদিবস শেয়ারের দাম কিছুটা কমে। ৯৬৭ টাকা ৪০ পয়সায় সপ্তাহ শেষ করে ওয়ালটনের শেয়ার।

গত সপ্তাহে টানা তিন কার্যদিবস দরপতন হলেও চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারের দামে আবার বড় উত্থান হয়েছে। প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৭২ টাকা ৩০ পয়সা। এতে সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২ হাজার ১৯০ কোটি ১৭ লাখ ১৯ হাজার ১৯৯ টাকা।

শেয়ারের এমন দাম বাড়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের থেকে কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা বেশি লাভবান হয়েছেন। কারণ ৩০২ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৯৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৭০ শতাংশ। বাকি দশমিক ২৭ শতাংশ শেয়ার আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে।

ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ মেটাতে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য গত ৭ জানুয়ারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে বিডিংয়ে অংশ নেয়ার অনুমোদন দেয়।

এ অনুমোদনের ফলে কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণে গত ২ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে ৫ মার্চ বিকেল ৫টা পর্যন্ত যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ে অংশ নেন। এ সময়ের মধ্যে বিডিংয়ে অংশ নেন ২৩৩ জন। এসব বিনিয়োগকারী সর্বনিম্ন ১২ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৭৬৫ টাকা করে ওয়ালটনের শেয়ার কেনার জন্য প্রস্তাব দেন।

এর মধ্যে সব থেকে বেশিসংখ্যক যোগ্য বিনিয়োগকারী ওয়ালটনের প্রতিটি শেয়ারের জন্য ২১০ টাকা দাম প্রস্তাব করেন। এই দামে ১৪ জন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক বিনিয়োগকারী দাম প্রস্তাব করেন ১৫০ টাকা করে। এই দামে ১০ জন বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ার কেনার আগ্রহ দেখান।

বিডিংয়ে বরাদ্দকৃত ৬০ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ারের জন্য ৩১৫ টাকার ওপরে বিডিং হয়। ফলে কাট-অফ প্রাইস হিসাবে ৩১৫ টাকা নির্ধারিত হয়। এর ওপর ভিত্তি করে কোম্পানিটি ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬টি সাধারণ শেয়ার ২৫২ টাকা মূল্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীর (অনিবাসী বাংলাদেশীসহ) কাছে বিক্রি করে।

সীমিতসংখ্যক শেয়ার নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় ওয়ালটনের শেয়ার। এ নিয়ে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা ব্যাপক সমালোচনাও করেন। কেউ কেউ বুক বিল্ডিং নীতিমালা পরিবর্তনের দাবি জানান।

একপর্যায়ে ওয়ালটনের বিডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা (ইলিজিবল ইনভেস্টর) নীতিমালা অনুসারে দাম প্রস্তাব করেছে কি না, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

কমিশনের এ সংক্রান্ত নেয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে কোনো কোম্পানির বিডিংয়ে ৬০ টাকার বেশি যেসব কোম্পানির দর প্রস্তাব করেছে, ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জারি করা বিএসইসির সার্কুলার অনুসারে হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা তলব করা হচ্ছে।

এমএএস/জেএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।