তিন জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে আরও ৫৪৯ কোটি টাকা অনুমোদন
‘মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা। মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে এ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়।
সংশোধনীতে এ প্রকল্পকে আরও ৫৪৯ কোটি ৩ লাখ টাকা অনুমোদন দেয়া হয়। ফলে এক হাজার ৫৬০ কোটি ১৫ লাখ থেকে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ালো ২ হাজার ১০৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সংশোধনীতে সময়ও বাড়ানো হয়েছে এক বছর। ২০১৭ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনে শেষ ছিল। এখন এর মেয়াদ বেড়ে দাঁড়ালো ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়/স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রকল্পটি ঢাকা বিভাগের মাদারীপুর জেলার শিবচর, রাজৈর, মাদারীপুর সদর ও কালকিনি উপজেলা; শরীয়তপুর জেলার শরীয়তপুর সদর, জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, গোসাইরহাট ও ডামুড্যা উপজেলা এবং রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী সদর, গোয়ালন্দ, পাংশা বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
গ্রাম সড়ক টেকসইভাবে উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি/অকৃষি অর্থনীতির সঞ্চালন, গ্রামীণ জনগণের জন্য গ্রাম, বাজার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, জনসাধারণের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষকের উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য গ্রোথ-সেন্টার/গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোতে বাজারজাত করা, নৌপথে মালামাল পরিবহন এবং কৃষিজাত পণ্য পরিবহন সহজ করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
প্রকল্প সংশোধনের কারণ ব্যাখ্যা করে এলজিইডি বলেছে, প্রকল্প এলাকার কিছু জনগুরুত্বপূর্ণ স্কিম যা মূল ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল না, সেগুলো সংশোধিত ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিছু সড়ক এলজিইডির অন্য প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে বিধায় সেগুলো বাদ দেয়া হয়েছে। কিছু সড়কে ছোট কালভার্ট/ইউড্রেন প্রয়োজন, যা মূল ডিপিপিতে ছিল না বিধায় সেগুলো সংশোধিত ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তারা আরও বলেছে, অনুমোদিত ডিপিপিতে কিছু সড়ক সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্যে এবং কিছু সড়ক আংশিক দৈর্ঘ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, এ সব আংশিক সড়ক পূর্ণদৈর্ঘ্যে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের অক্টোবরে শুরু হয়েছিল। এরপর এলজিইডির রেট শিডিউল দুবার হালনাগাদ করায় প্রতি কিলোমিটার কাজের ব্যয়ের প্রাক্কলন সমন্বয় করা হয়েছে। মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের কিছু স্কিম প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় সেখানে নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে সমস্যা হতে পারে বিধায় প্রকল্পের মেয়াদ সার্বিকভাবে এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো- ৫৫ দশমিক ১৪ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক (উপজেলা সড়ক), ১৫৫ দশমিক ৩১ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক (ইউনিয়ন সড়ক), ৩৭০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক (গ্রাম সড়ক-এ), ৫২৭ দশমিক ২৩ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক (গ্রাম সড়ক-বি), ১৯ দশমিক ১৪ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক (ইউনিয়ন সড়ক), ৬২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক (গ্রাম সড়ক-এ), ২৬৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক (গ্রাম সড়ক-বি), ২২ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক-বি এবং ৩৭৭ দশমিক ৪ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক মেরামত করা হবে।
৬ হাজার ২৫৮ দশমিক ৫ মিটার সেতু, ৩ হাজার ৩২১ দশমিক ৫৩ মিটার কালভার্ট, ১৪টি গ্রোথ সেন্টার/গ্রামীণ হাট-বাজার উন্নয়ন, তিনটি অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা এবং সাতটি বোট ল্যান্ডিং র্যাম্প নির্মাণ করা হবে।
পিডি/এফআর/এমকেএইচ