শরতেই বাজারে শীতের শিম, কেজি ২০০

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২০

নতুন সবজি হিসেবে বাজারে এসেছে শিম। তবে নতুন এ সবজির দাম অনেকটাই নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। কোনো বাজারেই শিমের কেজি ২০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।

শিমের এমন আকাশচুম্বী দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিম শীতের সবজি। শীত আসতে এখনও অনেক সময় বাকি আছে। তবে শীতের আগাম সবজি হিসেবে শিম ইতোমধ্যে বাজারে চলে এসেছে। আগাম বাজারে আসায় এ সবজিটির দাম বেশি।

তারা বলছেন, শীতের মধ্যে বাজারে যখন ভরপুর শিম আসবে, তখন কেজি ২০ টাকার মধ্যে চলে আসবে। তবে সহসা শিমের দাম কমার সম্ভাবনা কম। কারণ এখন এমনিতেই সব ধরনের সবজির দাম চড়া।

সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) শিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। তবে কেজি হিসেবে কোনো কোনো বাজারে শিম ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, অবশ্য ২৪০ টাকা কেজিতেও শিম বিক্রি হতে দেখা গেছে।

কারওয়ানবাজার ২০০ টাকা কেজি শিম বিক্রি করা মো. জয়নাল মিয়া বলেন, শিম শীতের সবজি। এখন ভ্যাপসা গরম চলছে। শীত আসতে এখনও অনেক সময় বাকি আছে। এখন যে শিম পাওয়া যাচ্ছে, তাকে আগাম শিম বলে।

তিনি বলেন, বাড়তি দাম পাওয়ার জন্য কিছু কৃষক এই আগাম শিম চাষ করেন। তবে শীতে শিমের যেমন ফলন হয়, এখনকার শিমের ফলন তার থেকে অনেক কম। আবার চাষও হয় কম। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কম থাকে। অন্যদিকে নতুন সবজি হওয়ায় বাজারে একধরনের বাড়তি চাহিদা থাকে, এসব কারণেই শিমের এমন দাম।

মালিবাগ হাজিপাড়া বৌ-বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) শিম বিক্রি করছেন ৫৫ টাকা। আর আধাকেজি নিলে দাম রাখা হচ্ছে ১০০ টাকা। খিলগাঁও বাজারে আধাকেজি শিম ১২০ টাকা এবং এক কেজি ২৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, বাজারে কয়েকদিন ধরে শিম এসেছে। তবে পরিমাণ খুব অল্প। অনেক চেষ্টা করে আজ আড়াই কেজি শিম কিনতে পেরেছি। একজন আধা কেজি শিম কিনেছেন। তিনজনের কাছে এক পোয়া করে বিক্রি করেছি। তবে বেশিরভাগ মানুষ দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন।

খিলগাঁওয়ে ব্যবসায়ী খায়রুল হোসেন বলেন, পাঁচ কেজি শিম এনেছিলাম। প্রায় সব বিক্রি হয়ে গেছে। আর আধাকেজির মতো আছে। আগে ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন যে আধাকেজি আছে তা ১০০ টাকায় বিক্রি করে দেব।

তিনি বলেন, বাজারে এখন সব সবজির দাম বেশি। এ বাজারে নতুন শিমের কেজি দুই'শ-আড়াই'শ টাকা হওয়া স্বাভাবিক। কারণ গত বছরও নতুন অবস্থায় শিমের কেজি দুই'শ টাকার ওপরে ছিল। আমাদের ধারণা অন্তত মাসখানেক শিমের দাম এমন থাকবে।

এদিকে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি। উস্তার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকায়। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। এ সবজিগুলো কয়েক সপ্তাহ ধরেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

চড়া দামে বিক্রি হওয়া সবজির তালিকায় রয়েছে- পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিংগা, বেগুন, কাকরল, ধেড়স, লাউ। চিচিংগা, ঝিঙা, ধুনদলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। পটল, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা পিস।

এদিকে ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি।

হাজিপাড়া বৌ-বাজার থেকে বাজার করা আমেনা বেগম বলেন, বাজারে এখন কোনো সবজি ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন আশা শিমে তো আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য হাত দেয়াই কঠিন। এক পোয়া শিমের দাম চাচ্ছে ৫৫ টাকা। এতো দাম দিয়ে সবজি কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তাই দাম শুনেই চলে আসছি।

খিলগাঁও থেকে বাজার করা দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি। সবজির দাম শুনলেই হতাশ হতে হয়। কিন্তু কিছু করার নেই বাধ্য হয়েই বাড়তি দাম দিয়ে সবজি কিনতে হচ্ছে।

এমএএস/এনএফ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।