৬ মাসের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রাইম ব্যাংক
২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসের আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করেছে বেসরকারি প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড। প্রাইম ব্যাংক এ সময়কালে ডিপোজিটে প্রবৃদ্ধি, নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) ব্যবস্থাপনায় লক্ষ্যণীয় উন্নতি, বাংলাদেশের প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ক্যাপিটাল টু রিক্স ওয়েটেড অ্যাসেটস রেশিও (সিআরএআর) অর্জন এবং সরকারের করোনাভাইরাস প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এমএসএমই খাতে অন্যতম সর্বোচ্চ ঋণ বিতরণ করেছে।
সোমবার (১০ আগস্ট) ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভায়, ২০১৯ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য প্রাইম ব্যাংক ১৩.৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে।
২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসে প্রধান প্রধান অগ্রগতিগুলো হচ্ছে :
>>>চলতি বছরের ৩০ জুন শেষে প্রাইম ব্যাংক এর মোট ডিপোজিট দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা, যা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের ২১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা থেকে ৪.৪৯% বেশি।
>>>নন-পারফর্মিং লোনে (এনপিএল) লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। ৩০ জুন পর্যন্ত এনপিএল দাঁড়িয়েছে ৪.২১%, যা পূর্বের বছরের একই দিনে ছিল ৬.০৭%। ২০২০ এর অর্ধবার্ষিক শেষে এনপিএল কভারেজ রেশিও হয়েছে ১২৯% যা আগের বছরের একই দিনে ছিল ৭১%।
>>>২০২০ এর অর্ধবার্ষিক শেষে ক্যাপিটাল টু রিক্স ওয়েটেড অ্যাসেটস রেশিও (সিআরএআর) দাঁড়িয়েছে ১৮.৩১%, যা বাংলাদেশের প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
>>>২০২০ এর প্রথম ছয় মাস শেষে রিটার্ন অন ইক্যুইটি (আরওই) দাঁড়িয়েছে ৪.৫৬% এবং রিটার্ন অব অ্যাসেটস (আরওএ) দাঁড়িয়েছে ০.৩৮%, যা ব্যাংকের অর্থনৈতিক দৃঢ়তার প্রতিফলন।
>>>প্রাইম ব্যাংক সরকারের করোনাভাইরাস প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এমএসএমই খাতে এখন পর্যন্ত ৭০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে, যা এ প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এমএসএমই খাতে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ ঋণ বিতরণ।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষিতে গ্রাহক ও কর্মীবাহিনীর নিরাপত্তায় কার্যকর উদ্যোগের জন্য যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্বখ্যাত ফাইন্যান্সিয়াল প্রকাশনা -- ইউরোমানি -- প্রাইম ব্যাংককে ‘এক্সিলেন্স ইন লিডারশিপ ইন এশিয়া ২০২০ পুরস্কার’রে ভূষিত করেছে। এটি প্রাইম ব্যাংকের জন্য এক অনন্য সম্মান কেননা দক্ষিণ এশিয়া থেকে একমাত্র ব্যাংক হিসেবে ব্যাংকটি এ পুরস্কার অর্জন করেছে।
এই প্রতিকূল সময়ে প্রাইম ব্যাংক ২০২০ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে সলো ভিত্তিতে ৬১.৮৮ কোটি টাকা নেট মুনাফা অর্জন করেছে, যা ২০১৯ সালের একই সময়ে ছিল ৯৯.২৭ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকটি সলো ভিত্তিতে ২৪৮.১৬ কোটি টাকা পরিচালনাগত মুনাফা অর্জন করেছে, যা পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ে ছিল ৩৩২.৪৭ কোটি টাকা।
পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাংকটির পরিচালনা মুনাফা ও কর পরবর্তী মুনাফা যথাক্রমে ২৫ শতাংশ ও ৩৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। রেগুলেটরি পদক্ষেপ হিসেবে ফি মওকুফ ও ইন্টারেস্ট রেট বেঁধে দেওয়ার ফলে আয় কমে গেছে।
২০২০ সালের ৩০ জুন শেষে সলো ভিত্তিতে ব্যাংকের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ০.৫৫ টাকা, যা ২০১৯ সালের একই সময়ে ছিল ০.৮৮ টাকা। ২০২০ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে সালে ভিত্তিতে শেয়ার প্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালু দাঁড়ায় ২৪.২১ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২২.৭৫ টাকা। ২০২০ এর অর্ধবার্ষিকীতে সলো ভিত্তিতে শেয়ার প্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়ায় ০.৭৫ টাকা, যা পূর্ববতী বছরের একই সময়ে ছিল ০.৮৪ টাকা।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও রাহেল আহমেদ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংকটকালে কর্মীবাহিনী ও গ্রাহকদের নিরাপত্তায় আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। নিরাপত্তা বজায় রেখে গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সার্ভিস প্রদান করাও ছিল অন্যতম অগ্রাধিকার। ভাইরাসটি সংক্রমণের শুরুর দিকেই আমরা সচেতনতা ও নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণ করি। প্রথমদিকেই পদক্ষেপ গ্রহণ করায় গ্রাহকদের অতি জরুরি সেবা ও পরিবর্তনশীল চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। সংকটকালে গ্রাহকদের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে প্রাইম ব্যাংক এর আছে পূর্বের অনেক নজির। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কর্মতৎপরতা ও গ্রাহকদের ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতা আমাকে উৎসাহিত করেছে। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস এর ওপর ভিত্তি করে আমরা এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবোই।’
এসআই/এসএইচএস/এমকেএইচ