৫০ হাজার থেকে ১ লাখের মধ্যে বেশি গরু বিক্রি হচ্ছে গাবতলীতে
আজকের দিন চলে গেলে ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দু’দিন। রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলী কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি শুরু হয়েছে। ব্যাপারীরা আশাবাদী, এই দু’দিনে হাটে ভালো বেচাকেনা হবে।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) বিকেলে সরেজমিন হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতার সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। ৫০ হাজার থেকে এক লাখের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরু বিক্রি হচ্ছে। সময় যতই গড়াচ্ছে পশু বিক্রির পরিমাণও ততই বাড়ছে। খামারি, গৃহস্থ ও ব্যাপারীরাও আশার আলো দেখছেন।
পাবনার ঈশ্বরদী থেকে গাবতলী হাটে এসেছেন রহমান ব্যাপারী। তিনি এবার ২৫টি গরু নিয়ে এসেছেন। গাবতলী টাওয়ারের পাশে অবস্থান নিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সর্বনিম্ন এক লাখ এবং সর্বোচ্চ চার লাখ টাকা দামের গরু এনেছি। এ পর্যন্ত আটটি গরু বিক্রি করেছি। তবে লাভের অংক তুলনামূলক কম। কারণ বেশি লাভের আশায় থাকলে পরে কপালে কী ঘটে তা বলতে পারছি না।’
কুষ্টিয়া থেকে গাবতলীতে আসা গরুর ব্যাপারী রানা ১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি ছয়টি গরু বিক্রি করেছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটু লাভ হলেই ছেড়ে দিচ্ছি। কারণ বেশি দামের আশায় গরু রেখে লাভ নেই। প্রতিটি গরুর পেছনে দৈনিক ৫০০ টাকা খরচ আছে। বিক্রি করে দিতে পারলেই বেঁচে যাই।’
ব্যাপারী রানা বলেন, ‘এবার হাটের হাবভাব ভালো লাগছে না। প্রতিবার এমন সময়ে হাটে পা ফেলার জায়গা থাকে না। এবার সে অবস্থা নেই।’
মিরপুর থেকে গাবতলী হাটে গরু কিনতে এসেছেন আরিফুল ইসলাম। তিনি দুটি বলদ গরু দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। তার ছেলে ইমন বললেন, গরু কিনে খুব খুশি। মনের মতো গরু হয়েছে।
মানিকগঞ্জ থেকে নজরুল ব্যাপারী ১৫টি ষাড় গরু নিয়ে এসেছেন। এ পর্যন্ত ৯টি গরু বিক্রি করেছেন। প্রতিটি গরু ৮০ হাজার থেকে ৯৫ হাজারের মধ্যে বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে গরুগুলো বিক্রি করছি সেগুলোর মাংসের মণ পড়ছে ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকার মতো। এবার গ্রামেও গরু সস্তা কিনেছি এ কারণে এসব দামে বিক্রি করতে পারছি। লাভ খুব বেশি হচ্ছে না। অল্প লাভে ছেড়ে দিচ্ছি।’
দুটি ধবধবে সাদা বলদ কিনেছেন ক্যান্টনমেন্ট থেকে আসা বিল্লাল হোসেন। দাম পড়েছে তিন লাখ। গরু দুটি কিনে তিনি জিতেছেন বলে মনে করছেন। তিনি বলেন, গত বছর এই গরু চার লাখের নিচে ছাড়েনি।
পাবনার আতাইকুলা থেকে ১৩টি গরু নিয়ে গাবতলী হাটে এসেছেন আজিজ ব্যাপারী। ১৩টি গরুর মধ্যে সাতটি গরু বিক্রি হয়েছে। তার মধ্যে চারটি ষাড় চার লাখের ওপর বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাত দিন হলো হাটে এসেছি। হাটের গতি ভালো লাগছে না। তাই কম লাভে বিক্রি করে বাড়ি চলে যেতে চাচ্ছি। এর আগের বছরে ঈদের একদিন আগে বৃষ্টির জন্য লস দিয়ে গরু বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল।’
জিগাতলা থেকে গাবতলী হাটে গেছেন মনোয়ার হোসেন। সন্ধ্যার আগে তিনি ৮৫ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় গরু কিনেছেন। ব্যাপারীরা বলছেন, গরুটির সাড়ে চার মণ মাংস হবে। মনোয়ার সাহেব গরুটি কিনতে পেরে খুব খুশি।
এফএইচএস/এসআর/জেআইএম