৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিস্তি বা ঋণকে খেলাপি দেখানো যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩১ পিএম, ২৩ জুন ২০২০
এই করোনা সংকটের মধ্যেও টাঙ্গাইলে এনজিওকর্মীদের কিস্তি আদায়ের চিত্র। ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। এর ফলে অর্থনীতির অধিকাংশ খাতই ক্ষতিগ্রস্ত এবং এর নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা করছে সরকার। তাই এনজিও বা ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে যেসব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ব্যবসা করছেন আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের কাউকে নতুন করে ঋণ খেলাপি না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ জুন) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সনদপ্রাপ্ত সব ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট পাঠিয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)। এর আগে এমআরএ গত ২২ মার্চ প্রজ্ঞাপন জারি করে ৩০ জুন পর্যন্ত কাউকে ঋণ খেলাপি না করার নির্দেশ দিয়েছিল। নতুন প্রজ্ঞাপনে সেটি আরও তিন মাস বাড়ানো হলো।

নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, 'বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কনোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব ও ক্ষুদ্রঋণ গ্রাহকদের স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত ২২ মার্চ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঋণ শ্রেণিকরণের বিষয়ে এ মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল যে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল, আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত উক্ত ঋণ তদাপেক্ষা বিরূপমাণে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। অর্থাৎ এ সময়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলেও কাউকে ঋণ খেলাপি ঘোষণা করা যাবে না। তবে কোনো ঋণের শ্রেণিমানের উন্নতি হলে তা বিদ্যমান নিয়মানুযায়ী শ্রেণিকরণ করা যাবে।'

'কিন্তু করোনার কারণে অর্থনীতির অধিকাংশ খাতই ক্ষতিগ্রস্ত এবং এর নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়ায় শিল্প, সেবা ও ব্যবসা খাত তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। বর্ণিত বিষয়াবলি বিবেচনায় এবং ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর করোনার নেতিবাচক প্রভাব সহনীয় মাত্রায় রাখার লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উক্ত ঋণ তদাপেক্ষা বিরুপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না।'

'অর্থাৎ করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক অক্ষমতার কারণে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি অপরিশোধিত থাকলেও তাদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্য কোনো কিস্তি বা ঋণকে বকেয়া বা খেলাপি দেখানো যাবে না। তবে কোনো ঋণের শ্রেণিমানের উন্নতি হলে তা বিদ্যমান নিয়মানুযায়ী শ্রেণিকরণ করা যাবে।'

এতে আরও বলা হয়, 'এই সংকট সময়ে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ গ্রহীতাদের কিস্তি পরিশোধে বাধ্য করা যাবে না। তবে কোনো আগ্রহী সক্ষম গ্রাহক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ইচ্ছুক হলে সে ক্ষেত্রে কিস্তি গ্রহণে কোনো বাধা থাকবে না।'

'এ ছাড়া গ্রামীণ ক্ষুদ্র অর্থনীতির চাকা সচল রাখার স্বার্থে অথরিটি কর্তৃক ইতোপূর্বে জারি সার্কুলারের প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ, সঞ্চয় উত্তোলন/ফেরত, জরুরি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, রেমিট্যান্স সেবা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা প্রদানসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।'

'মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি আইন, ২০০৬ এর ধারা ৯ (চ) ও ধারা ৪৮ এ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো। এই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে,'- বলা হয় প্রজ্ঞাপনে।

এমইউএইচ/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।