ব্যাংকারদের বেতন-ভাতা ১৫ শতাংশ কমানোর সুপারিশ
>> ব্যাংক বাঁচাতে ১৩ দফা সুপারিশ
>> চলমানসহ সব নিয়োগ বন্ধ রাখার সুপারিশ
>> আছে পদোন্নতি, ইনক্রিমেন্ট, ইনসেন্টিভ বন্ধের কথাও
ব্যাংক কর্মীদের বেতন-ভাতা ১৫ শতাংশ কমানোর সুপারিশ করেছে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। একই সঙ্গে কর্মীদের পদোন্নতি, ইনক্রিমেন্ট, ইনসেন্টিভ বোনাস বন্ধ করাসহ ব্যাংক বাঁচাতে ১৩ দফা সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
বিএবির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল স্বাক্ষরিত চিঠিতে ব্যাংকগুলোতে চলমান নিয়োগসহ সব নিয়োগ বন্ধ রাখার সুপারিশও করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন শাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং ও উপ-শাখা খোলা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
বিএবি বলেছে, 'করোনাভাইরাসে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে কর্মী ছাঁটাই না করে ব্যাংককে সচল রাখার জন্য প্রস্তাবগুলো দেয়া হয়েছে।'
চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সুপারিশ বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে বিএবি।
১৩ দফা সুপারিশ সম্বলিত চিঠিতে আরও আছে, সব প্রকার স্থায়ী সম্পদ ক্রয় বন্ধ রাখা, কর্মীদের লোকাল ও বিদেশি প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখা, সব বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ রাখা, সব প্রকার সিএসআর, ডোনেশন, চ্যারিটি বন্ধ রাখা, পত্রিকা (প্রিন্ট ও অনলাইন) ও টেলিভিশনে সব প্রকার বিজ্ঞাপন প্রদান বন্ধ রাখা, সব কাস্টমার গেট-টুগেদার বন্ধ রাখা।
চিঠিতে বিএবি বলেছে, 'কর্মকর্তাদের গেট-টুগেদার ও ব্যবস্থাপক সম্মেলন বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এসব সম্মেলন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে নিজস্ব পরিমণ্ডলে করতে হবে। এ ছাড়া বড় ধরনের ব্যয় (আইটি সম্পর্কিত, সফটওয়ার, হার্ডওয়ার ক্রয়) আপাতত সীমিত রাখা এবং অন্য সব ব্যয় কমিয়ে আনা।'
'ব্যাংকের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। কমে গেছে বিনিয়োগের উপর সুদের হারও। ব্যাংকের ঋণ আদায় প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। এমন পরিস্থিতির কারণে এ সুপারিশ করা হয়েছে,' বলছে বিএবি।
এদিকে ব্যয় কমাতে বিভিন্ন ব্যাংক ইতোমধ্যে কর্মীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
করোনার প্রাদুর্ভাবে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কর্মীদের ১৬ শতাংশ বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড। এতে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশরুর আরেফিন জাগো নিউজকে বলেন, করোনার কারণে এখন নতুন কোনো ব্যবসা নেই। অন্যদিকে সব ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনায় আয় কমে গেছে। ব্যয় বেড়ে ৬৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ১০০ টাকার আয়ে ৬৬ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এখন ব্যাংক বাঁচাতে ব্যয় কমানো ছাড়া উপায় নেই। এসব বিবেচনায় কর্মীদের চাকরি থেকে ছাঁটাই না করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ২২ জুন পর্ষদ সভায় এটি চূড়ান্ত হবে।
এদিকে গত মাস থেকেই এন্ট্রি লেভেল থেকে এমডি পর্যন্ত ৩ ও ৫ শতাংশ হারে বেতন-ভাতা কর্তন শুরু করেছে বেসরকারি এবি ব্যাংক। একই পথে হাঁটতে যাচ্ছে বিএবি চেযারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদারের এক্সিম ব্যাংকও। ব্যাংকটি ১২ শতাংশের মতো বেতন-ভাতা কমাতে চাচ্ছে।
এসআই/জেডএ/জেআইএম