অর্থ পাচার ঠেকাতে জরিমানা, টিআইএন থাকলে রিটার্ন বাধ্যতামূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১২ পিএম, ১১ জুন ২০২০

আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং ও ভুয়া বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ঠেকাতে নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) বাজেটে জরিমানা বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) গ্রহণকারীর আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিং করে পাচার হয়েছে এবং যে পরিমাণ প্রদর্শিত বিনিয়োগ ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হবে তার ওপর ৫০ শতাংশ হারে কর আরোপের বিধান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য এই প্রস্তাবিত বাজেট তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং ও ভুয়া বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির বিষয়ে সরকারের অবস্থান কঠোর। এ প্রবণতা রোধকল্পে বিদ্যমান অন্যান্য সকল বিধানাবলীর পাশাপাশি আয়কর অধ্যাদেশে একটি নতুন ধারা সংযোজনের প্রস্তাব করছি।’

এ বিষয়ে বলা হয়, প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী যে পরিমাণ অর্থ আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিং করে পাচার হয়েছে এবং যে পরিমাণ প্রদর্শিত বিনিয়োগ ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হবে তার ওপর ৫০ শতাংশ হারে কর আরোপিত হবে।

আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং ও ভুয়া বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার ও কর ফাঁকি রোধে প্রস্তাবিত বিধান অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।

প্রস্তাবিত বাজেটে টিআইএন গ্রহণকারীর আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, সরকারের বিগত এক যুগ সফলভাবে দেশ পরিচালনায় বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে অগ্রগতির পাশাপাশি আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অনেক নাগরিক আয়কর প্রদানে সক্ষমতা অর্জন করেছেন। বর্তমানে আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকার কারণে টিআইএনধারীর অর্ধেকেরও কম আয়কর রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। ফলে অনেক টিআইএনধারীর ক্ষেত্রে করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও আয়কর রিটার্ন দাখিল না করে কর পরিশাধ এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই আমি যৌক্তিক কয়েকটি ক্ষেত্র ব্যতীত সকল টিআইএন গ্রহণকারীর জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার বিধান প্রস্তাব করছি।’

প্রস্তাবিত বিধান কার্যকর হলে আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা বাড়বে এবং কর ফাঁকির সুযোগ বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আয়কর প্রদানে সক্ষম সকল নাগরিক যাতে অতি সহজে আয়কর রিটার্ন দাখিল এবং আয়কর প্রদান করতে পারেন, সেজন্য আয়কর রিটার্ন ফরমের সহজীকরণ প্রয়োজন। তাই, প্রান্তিক করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজ করার লক্ষ্যে বিদামান আয়কর রিটার্ন ফরমসমূহের পাশাপাশি এক পৃষ্ঠার একটি নতুন আয়কর রিটার্ন ফরমের প্রস্তাব করছি।

সহজ করা ফরমে করদাতারা সহজেই আয়কর রিটার্ন দাখিল ও আয়কর প্রদান করে একজন নাগরিক হিসেবে দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে গর্ববোধ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।

এমএএস/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।