মোবাইলে পৌঁছে যাচ্ছে ৫০ লাখ পরিবারের সহায়তার অর্থ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ১৪ মে ২০২০

হতদরিদ্র ও কর্মহীন ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সহায়তার এ অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিনা খরচে পরিবারগুলোতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

এ কাজে সহযোগিতা করছে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অর্থাৎ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সেবাদানকারী চার প্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো- বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা ‘নগদ’, ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিং ‘বিকাশ’, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের শিওরক্যাশ।

এ বিষয়ে বিকাশের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম জাগো নিউজকে বলেন, ৫০ লাখ দুস্থ পরিবারকে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে বিকাশের মাধ্যমে ১৫ লাখ সুবিধাভোগী পরিবারের কাছে অর্থ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সকালে এ কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর আমরা অর্থ পাঠানো শুরু করেছি। সরকার থেকে যেসব সুবিধাভোগী পরিবারের তালিকা দেয়া হচ্ছে তা জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) মাধ্যমে যাচাই করে সঠিক ব্যক্তির হিসাবে অর্থ পাঠানো হচ্ছে। আজ থেকে শুরু হয়েছে। ঈদের আগেই সব পরিবারের হাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের অর্থ পৌঁছে দেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের সময় থেকে সুবিধাভোগীরা অর্থ পাওয়া শুরু করেছেন। পর্যায়ক্রমে সবার কাছে বিনা খরচে অর্থ পৌঁছে দেয়া হবে— জানিয়েছে ‘নগদ’ কর্তৃপক্ষ।

৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে বিকাশ ১৫ লাখ পরিবারের কাছে অর্থ পৌঁছে দেবে। সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৭ লাখ পরিবারের কাছে অর্থ পৌঁছে দেবে ‘নগদ', রকেট দেবে ১০ লাখ এবং আট লাখ পরিবারের কাছে অর্থ পৌঁছে দেবে শিওরক্যাশ।

এদিকে ৫০ লাখ পরিবারের সহায়তার অর্থ সরকারের তালিকা অনুযায়ী সুবিধাভোগীর পরিচয় যাচাই করে অর্থ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি যাদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট নেই তাদের নতুন হিসাব খোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এ কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন সেবার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস)-এর সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম্স ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে। নির্দেশনার চিঠি এমএফএস সেবা প্রদানকারী সব ব্যাংক ও তাদের প্রোভাইডার এবং ডাক অধিদফতরের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারিজনিত পরিস্থিতিতে সরকার ৫০ লাখ দুস্থ পরিবারের জন্য নগদ সহায়তা সরাসরি সুবিধাভোগীর মোবাইল হিসাবে প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিতকরণে এমএফএস সেবা প্রদানকারী সকল ব্যাংক বা তাদের সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহ কর্তৃক নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত সুবিধাভোগীর তালিকা মোতাবেক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) যাচাইপূর্বক এমএফএস অ্যাকাউন্ট খোলার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নগদ সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্নের জন্য এজেন্ট পয়েন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ নগদ অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এমএফএস প্রোভাইডারকে নির্দেশনা দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে মে ও জুন- এই দুই মাস ৫০ লাখ পরিবার আড়াই হাজার টাকা করে পাঁচ হাজার করে টাকা পাবে। এ কাজে সহযোগিতা করছে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সেবাদানকারী চার প্রতিষ্ঠান।

ইতোমধ্যে সহায়তার এক হাজার ২৫৭ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সহায়তার এ অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিনা খরচে প্রত্যেক পরিবারের হাতে ঈদের আগে পৌঁছে দেয়া হবে।

উদ্যোগটির সঙ্গে জড়িত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ। পরিবার চিহ্নিত করা হয়েছে স্থানীয় সরকার অর্থাৎ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের সাহায্যে। তালিকায় রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকসহ পরিবহন শ্রমিক, হকারসহ নানা পেশার মানুষকে রাখা হয়েছে।

এসআই/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।