রেকিট বেনকিজারের ১২৫০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজারের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ার হোল্ডারদের ১২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার হোল্ডাররা প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ হিসেবে নগদ ১২৫ টাকা পাবেন।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের ব্যবসার ওপর এই লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এটিই এক হিসাব বছরে কোম্পানির সর্বোচ্চ লভ্যাংশ ঘোষণা।
কোম্পানিটির বড় ধরনের এই লভ্যাংশের ঘোষণা এমন সময় এলো যখন মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারাবিশ্ব অনেকটাই স্থবির। বিশ্ব শেয়ারবাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের শেয়ারবাজারও করোনার থাবাই জবুথবু।
এমনকি লভ্যাংশ ঘোষণা আসার আগে লেনদেন হওয়া শেষ ১২ কার্যদিবসে রেকিট বেনকিজারের প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৪৬ টাকা ৮০ পয়সা কমে যায়। এতে স্বল্প মূলধনের প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমে ৬৯ কোটি ৩৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এরপর সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে ২৬ মার্চ থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রয়েছে। এই কন্ধের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধরনের সুখবর দিল রেকিট বেনকিজার।
ডেটল, মরটিন, হারপিক, ভ্যানিশ, লাইজল ও ভিটসহ কয়েকটি প্রসাধনী পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা করা কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকেই শেয়ার হোল্ডারদের মোটা অঙ্কের লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বরাবরই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। যে কারণে এখন শেয়ারবাজারের সব থেকে দামি শেয়ারের প্রতিষ্ঠান এটি। তবে এক হিসাব বছরে এর আগে কখনো ১২৫০ শতাংশের এত বড় লভ্যাংশ দেয়নি বহুজাতিক এই কোম্পানিটি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, ওষুধ ও রসায়ন খাতের প্রতিষ্ঠান রেকিট বেনকিজার ২০১৮ সালে শেয়ার হোল্ডারদের ৭০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগের বছর ২০১৭ সালে শেয়ার হোল্ডারদের ৭৯০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া ২০১৬ সালে ৭৭৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ৬৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় এই কোম্পানিটি।
নিয়মিত এমন বড় লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ মাত্র ৪ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ৪৭ লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে ৮২ দশমিক ৯৬ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। সে হিসাবে শেয়ার হোল্ডারদের বড় লভ্যাংশ দিলেও তার সিংহভাগই নিয়ে যাচ্ছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা।
অপরদিকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ শেয়ার। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩ দশমিক ৪৯ শতাশ ও বিদেশিদের কাছে ৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বাকি ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সরকারের কাছে।
২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরের ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ার হোল্ডারদের অনুমোদন নেয়ার জন্য রেকিট বেনকিজার বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ নির্ধারণ করেছে আগামী ৩ জুন। আর রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ মে। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ১৩১ টাকা ৬ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৪২ টাকা ৬৪ পয়সা।
এমএএস/এমএফ/পিআর