করোনা : যুক্তরাজ্যে দেড়শ কোটি ডলার বীমা দাবি
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে যুক্তরাজ্যের বীমা কোম্পানিগুলোকে প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন পাউন্ড (দেড়শ কোটি ডলার) বীমা দাবি পরিশোধ করতে হতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্যে লোকসান, দেশ-বিদেশে ভ্রমণ বাতিলসহ বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বীমা গ্রাহকদের এই অংক দিতে হবে কোম্পানিগুলোকে।
যুক্তরাজ্যের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্রিটিশ ইন্স্যুরার্স (এবিআই)-এর বরাত দিয়ে এমন তথ্য দিয়েছ সেখানকার সংবাদমাধ্যম।
এবিআই জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে লোকসান, দেশ-বিদেশে ভ্রমণ বাতিল, বিবাহ অনুষ্ঠান বন্ধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আনন্দভ্রমণ বাতিল এবং সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের বীমা দাবি বাবদ কোম্পানিগুলোকে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন পাউন্ড বীমা দাবি পরিশোধ করতে হবে।
সংগঠনটি বলছে, করোনাভাইরাসের কারণে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন পাউন্ড বীমা দাবির যে পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে তা একদম প্রাথমিক আনুমানিক হিসাব। এই হিসাবের মধ্যে যুক্তরাজ্যের সকল ক্ষতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বরং প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য ক্ষতির একটি চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র।
এবিআইয়ের মহাপরিচালক হিউ ইভানস বলেছেন, এটি একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা এবং বীমা কোম্পানিগুলো স্বীকার করছে যে, এটি সবার জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক সময়। অনেক ব্যবসায়ী যখন মহামারি বীমার আওতার বাইরে তখনো যুক্তরাজ্যের বীমা কোম্পানিগুলো ১ দশমিক ২ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি বীমা দাবি পরিশোধের প্রত্যাশা করছে, এটি বীমা গ্রহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
এবিআইয়ের হিসাবে, ১ দশমিক ২ বিলিয়ন পাউন্ডের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত ক্ষতির জন্য ৯০০ মিলিয়ন পাউন্ড বীমা দাবি রয়েছে। দেশ-বিদেশে ভ্রমণ বাতিল সংক্রান্ত বীমা দাবি ২৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড। আর বাতিল হওয়া বিভিন্ন বিবাহ অনুষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আনন্দভ্রমণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান বন্ধের কারণে ২৫ মিলিয়ন পাউন্ড বীমা দাবি দিতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের।
এছাড়া চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় কায়ার ও ডেনিসের কারণে বীমা কোম্পানিগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে আরও ৩৬৩ মিলিয়ন পাউন্ড।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৪ মার্চ থেকে যুক্তরাজ্যে লকডাউন চলছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে লেড় লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনার থাবায় জীবন দিয়েছেন ২১ হাজারের বেশি মানুষ। বিপরীতে সুস্থ হয়েছেন ৩৪৪ জন।
করোনা আক্রান্ত হয়ে আরোগ্য লাভ করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজেও। সুস্থ হয়ে কাজে ফিরেই বরিস জনসন করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করে বলেছেন, করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জারিকৃত লকডাউন শিথিল করলে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাজ্য করোনাভাইরাসের পিক টাইম এখনো পার করছে। মৃতের সংখ্যা কমে এলেও লকডাউন শিথিলের পরিকল্পনা নেই। লকডাউন শিথিল হলে দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ শুরু হবে। যা ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। করোনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি নিলে কেবল নতুন করে মৃত্যুমিছিলই ঘটবে না, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ও নেমে আসবে।
এমএএস/এইচএ/এমএস