কাজের অর্ডার থাকলে পোশাক কারখানা খোলা
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান ছুটির সময়ে আন্তর্জাতিক কাজের অর্ডার থাকলে পোশাক কারখানা খোলা রাখতে পারবেন মালিকরা। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার (৪ এপ্রিল) এক অডিও বার্তায় এ কথা জানান বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক।
রোববার (৫ এপ্রিল) থেকে পোশাক কারখানা খোলা থাকবে কিনা এ প্রশ্নের উত্তরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, করোনা মহামারির এ সময়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরে থেকে একটি নির্দেশনা দিয়েছে, সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে যেসব রফতানিমুখী শিল্পে আন্তর্জাতিক ক্রয়াদেশ আছে এবং যারা করোনার সরঞ্জামাদি, মাস্ক চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামসহ (পিপিই) করোনা প্রতিরোধী সামগ্রী তৈরি করছে এমন কারখানাগুলো তাদের শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে খোলা রাখতে পরবে। তাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব কিভাবে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দিব।
দ্বিতীয় হচ্ছে মার্চ মাসের বেতন নিয়ে কোনো অনিহা থাকা যাবে না। মার্চ মাসের বেতন শ্রমিকরা পাবেনই এটা নিশ্চিত করতে চাই।
গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বর্তমান অবস্থা বিবেচনার বিষয়ে [বিজিএমইএ সভাপতি বলেন], এ সময়ে শ্রমিক কোনো কারণে কারখানায় উপস্থিত না থাকেন তাহলে মানবিক বিবেচনায় তার চাকরিটি হারাবেন না। এটি আমাদের বিজিএমইএর প্রত্যেকটি সদস্যর কাছে অনুরোধ করবো। আমি আশাকরি পোশাক মালিকরা এটি শুনবেন বলে জানান পোশাক মালিকদের এ নেতা।
কারখানা খোলার বিষয়ে একই নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ নীটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)।
বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) এক বার্তায় বিকেএমইএ সংগঠনের সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান বলেন, ৪ এপ্রিলের পর থেকে কারখানা চালু রাখবেন কিনা বন্ধ রাখবেন এটি আপনার সিদ্ধান্ত। যদি কেউ কারখানা চালু রাখেন তাহলে, করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে আপনার শ্রমিকদেরকে রক্ষা করবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধি মেনে কারখানা পরিচালনা করবেন।
শনিবার (৪ এপ্রিল) পর্যন্ত বিকেএমইএর পক্ষ থেকে কারখানা বন্ধ রাখার যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল, তা আর ৪ এপ্রিলের পর থেকে থাকছে না। তবে কারখানা চালু কিংবা বন্ধ রাখার বিষয়টি বিকেএমইএকে জানাতে হবে।
বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, কারখানা খোলা বা বন্ধ যে সিদ্ধান্তই গ্রহণ করুন না কেন, সব শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন অবশ্যই সময়মত প্রদান করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বেতন দেরি করা যাবে না। শ্রমিক অসন্তোষ যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
এর আগে গত ২৬ মার্চ এক বার্তায় বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক জানিয়েছিল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ সময় জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনায় তৈরি পোশাক কারখানাগুলোও বন্ধ রাখতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানায় বিজিএমইএ।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান ছুটি আরও সাতদিন বাড়ানো হয়েছে। এরমধ্যে আগামী ৫-৯ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ছুটি বাড়ানো হলেও কারখানা বন্ধের সময় বাড়বে না। অর্থাৎ যাদের কাজের অর্ডার থাকবে তারা ৫ এপ্রিল থেকে খোলা রাখতে পারবে।
এসআই/এএইচ/এমকেএইচ