একনেকে ৭ উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য বসতভিটা তৈরি, মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসন ভবন নির্মাণসহ ৭টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রকল্পগুলোতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৫শ ৪৪ কোটি টাকা। যদিও ব্যয়ের হিসাব নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য মিলেছে। ২ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী। আর তার দফতর থেকে করা নথিতে বলা হয়েছে ২ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে ‘গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় (ক্লাইমেট ভিক্টিমস্ রিহ্যাবিলিটেশন)’ নামক প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙনের ফলে ভূমিহীন ১০ হাজার পরিবারের মধ্যে বসতবাড়ি বিতরণ করা হবে। প্রত্যেক পরিবারের জন্য ৩০০ বর্গফুট ফ্লোর স্পেসে আরসিসি পিলারসহ দু কক্ষবিশিষ্ট ঘর এবং পাঁচ রিং বিশিষ্ট স্যানিটারি ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হবে। সরকারি খাস জমিতে এসব বসতভিটা নির্মিত হবে বলে সভায় জানানো হয়।
এ প্রকল্পটি সারাদেশব্যাপী হলেও রংপুর, রাজশাহী, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগ প্রাধান্য পাবে বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল।
সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে জেলাভিত্তিক ভূমিহীন এবং বন্দোবস্তযোগ্য খাসজমির হালনাগাদ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এখন পোভার্টি ম্যাপ অনুসরণ করে প্রকল্প এলাকা নির্বাচন করা হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আরো বলেন,‘বসতভিটা বিতরণ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য সরকার প্রতিটি পরিবারকে এককালীন ১৫ হাজার টাকা দেবে। এছাড়াও এসব এলাকায় সুপেয় পানি ও বিদ্যুতেরও ব্যবস্থা করা হবে।
সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২৫৮ কোটি টাকায় ভূমি মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রী এসময় জানান।
এদিকে, ঢাকার বেইলী রোডে মন্ত্রীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ করবে সরকার। যেখানে ১৫ তলা আবাসিক ভবনে মোট ২৮টি ফ্ল্যাট নির্মিত হবে বলে প্রস্তাব ছিলো। কিন্তু পরে ৬তলা করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন হবে সাড়ে ৫ হাজার বর্গফুট। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৪ কোটি টাকা।
অপরদিকে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা দূর করতে এক হাজার চৌষট্টিটি ফ্ল্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর’ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাজিরা প্রান্তে একটি ব্রিগেড স্থাপন করবে সরকার। একইসঙ্গে সেতুর মাওয়া প্রান্তের নিরাপত্তা ও তদারকির জন্য স্থাপনাও নির্মাণ করবে সরকার। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২০১৯ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে’।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে আজকের একনেক সভায় ৬০২ কোটি টাকার আরো একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেযা হয়। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ও পুনর্বাসন করা হবে। একই সাথে ৬৪০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সেতুও নির্মাণ করা হবে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর ২০২০ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি সম্পন্ন করবে বলে সভায় জানানো হয়।
৪৫ কোটি টাকায় ‘খুলনা (রূপসী)- শ্রীফলতলা-তেরখাদা সড়ক উন্নয়ন’ এবং ৮৫২ কোটি টাকায় ‘নাজিরহাট - মাইজভান্ডার সড়ক উন্নয়ন’ নামক অপর দুটো প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
এসএ/আরএস/পিআর