ইইউতে জিএসপি সুবিধা বহাল : শ্রম মন্ত্রণালয়ের সফলতা
ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর ন্যায়পাল কার্যালয়। করোনাভাইরাসের মহামারীজনিত বিশ্ব বাণিজ্যের নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে রফতানি বাণিজ্য ইইউভুক্ত দেশসমূহে জিএসপি সুবিধা সাময়িক বাতিলের প্রস্তাব খারিজ, শ্রম মন্ত্রণালয়ের সফলতা বলছেন প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্য বিষয়ে ইইউ ন্যায়পাল কার্যালয়ের এ ধরনের একটি ইতিবাচক রায় দেয়ার প্রেক্ষিতে বুধবার এক বিবৃতিতে শ্রম প্রতিমন্ত্রী শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম এর নেতৃত্বে মন্ত্রণালয়ের এই দলগত অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
একইসাথে প্রতিমন্ত্রী বাণিজ্য, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বেপজাসহ সংশ্লিষ্ট সকল দফতরের যেসকল কর্মকর্তা এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন (আইটিইউসি), ক্লিনক্লথ ক্যামপেইনসহ শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করে এরূপ চারটি আন্তর্জাতিক সংগঠন বাংলাদেশের শ্রমমান নিয়ে প্রশ্ন তুলে ২০১৬ সালে ইইউভুক্ত দেশসমূহে জিএসপি সুবিধা সাময়িক প্রত্যাহারের আবেদন জানায়।
উল্লেখ্য, প্রায় একইরকম অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইইউ ইতোমধ্যে কম্বোডিয়ার জিএসপি সুবিধা আংশিক বাতিল করে দিয়েছে। ফলে কম্বোডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রফতানি পণ্যসমূহ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অভিযোগকারী চারটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শ্রমমান নিয়ে বাংলাদেশকে শ্রম আইন এবং শ্রম বিধিমালা যুগোপযোগী করা, ইপিজেড শ্রম আইন সংশোধন, শ্রম আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধি, শিশু শ্রম নিরসন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের পরিদর্শক নিয়োগ, শ্রমিক হয়রানি বন্ধ, জবরদস্তিমূলক শ্রম বিষয়ক প্রোটোকল-২৯ এবং ন্যূনতম বয়স বিষয়ক আইএলও কনভেনশন-১৩৮ অনুস্বাক্ষরসহ নয়টি বিষয়ের ওপর কাজ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের চার বছরব্যাপী বিভিন্ন পদক্ষেপে গত ২৪ মার্চ ইইউ ন্যায়পাল কার্যালয় আন্তর্জাতিক চারটি সংগঠনের ওই আবেদন খারিজ করে দেয়। ইতোমধ্যে শ্রম আইন, ইপিজেড আইন সংশোধন করা হয়েছে, শ্রম বিধিমালা যুগোপযোগী করার কাজ চলছে, শিশু শ্রম নিরসনে কাজ শুরু হয়েছে, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরে জনবল নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারপরও এ বিষয়গুলোতে প্রয়োজনে আরো উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানানো হয়।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপসমূহকে ইতিবাচকভাবে নিয়ে গত বছর অক্টোবরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এগারো সদস্যের প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফরকালে সরকার এবং ইইউ একটি রোডম্যাপ প্রণয়নে ঐকমত্যে পৌঁছে এবং তাদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে সরকার এবছর ২ জানুয়ারি একটি রোডম্যাপ ইউরোপীয় কমিশনের কাছে জমা দেয়। প্রেরিত রোডম্যাপটি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করে ইএবি এর আওতায় জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইইউ এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে কাজ করার ফলস্বরূপ এ সফলতা এসেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এমইউএইচ/এসএইচএস/এমএস