এক সপ্তাহ বন্ধ থাকবে সব শপিং মল-বিপণিবিতান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০৪ পিএম, ২২ মার্চ ২০২০

করোনা ভাইরাসের কারণে ২৫ থেকে ৩১ মার্চ সারা দেশের সব শপিং মল ও বিপণিবিতান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দোকান মালিকরা।

রোববার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা ২৫ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সুপার মার্কেটের সকল সব শপিং ও কাপড়ের দোকান (বিপণিবিতান)  বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ সিদ্ধান্তের ফলে শুধু কাপড়ের দোকান বন্ধ থাকবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্য সকল ধরনের পণ্যের দোকান খোলা থাকবে।

এ সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন কাপড়ের মার্কেটে ক্রেতা আসে না। আমাদের লোকজনও (কর্মী) আসতে চাই না। এতে আমাদের অপারেটিং কস্ট বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে আমরা আপাতত ২৫ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত কাপড়ের মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অপরদিকে ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতিও একই ঘোষণা দিয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাসপাতাল, ক্লিনিক, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধের দোকান, ব্যাংক-এটিএম বুথ, ফলের দোকান, মুদির দোকান, কাঁচাবাজার, মাছ-মাংসের দোকান, স্টেশনারি, হার্ডওয়্যার, মোবাইল ও ফ্যাক্সিলোড, এবং শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান খোলা থাকবে।

মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৩ হাজার, আক্রান্ত ৩ লাখের বেশি
বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে, একই সঙ্গে তিন লাখের কোটা পার হয়েছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা। ইতোমধ্যেই ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। সবশেষ তথ্য অনুসারে, এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৭ হাজার ৬২৫ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৩ হাজার ৫০ জন

চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯৫ হাজার ৭৯৭ জন কোভিড-১৯ রোগী। চিকিৎসাধীন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৭৮। এদের মধ্যে অন্তত ৯ হাজার ৩০০ জনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। চীনে গতকাল নতুন করে ৪৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন ছয়জন। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়ছে ৮১ হাজার ৫৪ জন, মৃত্যু ৩ হাজার ২৬১ জনের।

দেশে আক্রান্ত বেড়ে ২৭
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আরও তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে ভাইরাসটিতে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ জন। এছাড়া সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও দুজন, ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন পাঁচজন। তবে নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি। অর্থাৎ করোনায় দেশে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত দুজনই।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে জানান, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় সন্দেহভাজন হিসেবে আরও ৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এছাড়া আগে আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। এবার নতুন করে আরও দুজন সুস্থ হয়েছেন। ফলে মোট পাঁচজন সুস্থ হয়েছেন।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত
করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। রোববার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করা হলেও আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার পরবর্তী তারিখ জানানো হবে।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ড ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জাগো নিউজকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ পরীক্ষা স্থগিত রাখা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরবর্তী ১৫ দিন পর পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে সভা করে এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে পরবর্তী পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হতে পারে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসের জন্য এইচএসসি পরীক্ষা ১ এপ্রিল শুরু না করে এটি ঈদুল ফিতরের পর আয়োজন করার প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। এরপর সুবিধামতো সময়ে এ পরীক্ষা আয়োজন করা যেতে পারে। তবে শিক্ষার্থীরা যাতে সেশনজটে না পড়ে, সেটি মাথায় রেখে এইচএসসি পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি প্রকাশ করা হবে।

এমএএস/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।