সিপিডির অর্থ আসে কোথা থেকে, প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীর
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অর্থের উৎস সম্পর্কে জানতে চেয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘তারা (সিপিডি) গবেষণা প্রতিষ্ঠান, কিন্তু তাদের টাকা কোথা থেকে আসে? সরকারের তো রেভিনিউ পাওয়ার জায়গা আছে। ওরা কোথা থেকে রেভিনিউ পায়? এ প্রশ্নের জবাব আমি চাই। এটা সম্পর্কে আমি তাদের কাছ থেকে পরিষ্কার স্টেটমেন্ট চাই।’
তিনি বলেন, ‘এই রেভিনিউ পেয়ে তারা কী কাজ করে? কতজন লোকের চাকরির ব্যবস্থা তারা করছে? তারা কোন কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে? তারা রেভিনিউ কেন পায়? তারা এ দেশের কারও না কারও জন্য কাজ করার জন্য পায়। তারা সেই কাজটা করছে কি না, সেটাও আমার জানা দরকার।’
সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নিজ দফতরে জাপান সরকারের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রোববার (৩ নভেম্বর) ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা : ২০১৯-২০ অর্থবছর প্রারম্ভিক মূল্যায়ন’ করতে গিয়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিকে ‘সুতা কাটা ঘুড়ি’র সঙ্গে তুলনা করেন সিপিডি সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘কাটা সুতার সাথে যেমন ঘুড়ির সম্পর্ক থাকে না, তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রবৃদ্ধির সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে না।’
সিপিডি সবসময় তাদের লাইনে আছে, তাদের নিজস্ব অবস্থান থেকে এসব বলে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অবস্থান তাদের এক রকম এবং আমাদের এক রকম। একটা কথা আছে, যার নুন খাই তার গুণ গাই। আমি নুন খাই আমাদের দেশের জনগণের। আমি গুণকীর্তন করব দেশের জনগণের। উনারা কারটা খায়, আমি জানি না। উনারা কার গুণকীর্তন করে, তাও আমি জানি না।’
সিপিডি যে সবসময় খারাপ বলে, তা নয় বলেও মনে করেন মুস্তফা কামাল। বলেন, ‘সিপিডি কিছু গঠনমূলক তথ্যও দেয়। কিন্তু অনেক সময় গঠনমূলক তথ্য দিতে গিয়ে ওভার ডু (বাড়িয়ে বলে) করে ফেলে।’
সিপিডির ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে কি না-হচ্ছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে কি না-হচ্ছে, এটা আপনারা ভালো জানেন। ২০০১ সালে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। সেটা কমে এখন ২০ শতাংশের কাছাকাছি। এই যে দরিদ্র দূর হলো, এটা কিসের হাত ধরে হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে। আর কোনো রকম ম্যাজিক আমাদের হাতে নাই।’
বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে সিপিডি মূল্যায়ণ করলে খুশি হতেন বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। বলেন, ‘অন্যদের কতটা বাড়ছে, সেটা বললে আমার কাছে পরিষ্কার হত। আমরা একা নই, বিশ্বের অংশ। এখন সারাবিশ্বে একটা টানাপড়েন চলছে। আমেরিকার সঙ্গে চায়নার বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। আমেরিকার সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে। ইউরোপে ব্রেক্সিট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা অস্থিরতা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি বিশেষ করে আমাদের রফতানি বাণিজ্য একটু ঝুঁকির মধ্যে থাকবেই। এ পরিস্থিতি আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অবশ্যই মোকাবিলা করতে পারব।’
পিডি/আরএস/জেআইএম