মিয়ানমার-তুরস্ক-মিসর থেকে আমদানি হচ্ছে পেঁয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২৫ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হঠাৎ করেই পেঁয়াজের ঝাঁজ বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ খাদ্যপণ্যটির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ।

বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। পেঁয়াজ আমদানি ও বাজারজাত সহজ এবং দ্রুত করতে সরকার ইতোমধ্যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং তদারকি জোরদার করেছে। প্রতিবেশী ভারতে প্রতি টন পেঁয়াজের মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইজ (এমইপি) নির্ধারণের কারণে বাংলাদেশ এখন মিয়ানমার, তুরস্ক, মিসর থেকেও পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাজারদর-সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাফর উদ্দীন বলেন, মিয়ানমার থেকে ইতোমধ্যে প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজারেও দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। পাশাপাশি মিসর ও তুরস্ক থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা হয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে এগুলো বাংলাদেশে এসে পৌঁছবে। এছাড়া ভারত থেকে নতুন পেঁয়াজ শিগগিরই বাজারে আসছে।

সচিব আরও বলেন, বিভিন্ন হাট-বাজারের পেঁয়াজ দ্রুত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পৌঁছানোর জন্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশে পেঁয়াজের মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো বাজারেই পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, মূল্য দ্রুত কমে আসছে।

গতকাল রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিল, মুগদা, খিলগাঁও, মালিবাগসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ৭০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। প্রতিবেশী দেশ ভারতে পেঁয়াজের রফতানিমূল্য তিনগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। মূলত এর প্রভাবেই দেশের বাজারে গত ২০ দিনে ৮০ টাকায় উঠেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এরপরও পেঁয়াজের দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না। পেঁয়াজের দামে নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীগণের সঙ্গে বাজার-দর সংক্রান্ত বিষয়ে সোমবার আলোচনা সভায় বসেন বাণিজ্য সচিব।

সচিব সভায় উপস্থিত পেঁয়াজ আমদানিকারক ও পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আমদানি, মজুদ ও মূল্য পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। ব্যবসায়ীরা জানান, পেঁয়াজের বর্তমান মূল্য খুবই সাময়িক। ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে, আমদানিও বাড়ছে। সরকারের চলমান সহযোগিতা অব্যাহত থাকায় পেঁয়াজের বাজার দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসছে।

সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) মো. শাখাওয়াত হোসেন, টিসিবি’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আবু রায়হান আল-বেরুনী, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. ইদ্রিস, ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. মিজানুর রহমান, শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারক হাজী মো. মাজেদ, মো. হাবিবুর রহমান, মো. হাফিজুর রহমান, নারায়ন চন্দ্র রায়, উত্তম কুমার সাহা, মো. আব্দুল মান্নান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এমইউএইচ/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।