সাপ্লাই চেইন অর্থায়নে সমন্বিত গাইডলাইন জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২০ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সাপ্লাই চেইন অর্থায়নে সমন্বিত গাইডলাইন জরুরি। সাপ্লাই চেইন অর্থায়নে সমন্বিত গাইডলাইন না থাকায় ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আস্থা পাচ্ছে না। এ কারণে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সাপ্লাই চেইন অর্থায়ন তেমন গতি পায়নি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা।

অনুষ্ঠানে বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন ও পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জিসহ চার সদস্যের একটি দল এ গবেষণা সম্পন্ন করেন। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএমর সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা সিএফএ, বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক মো. রুহুল আমীন এবং তোফায়েল আহমেদ।

গবেষণায় প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি দুই ধরনের তথ্যের ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণায় দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিআইবিএমের প্রকাশনা থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান। আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রিন্সিপাল ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট ডংগং জাং।

প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি বলেন, সাপ্লাই চেইন অর্থায়নে সমন্বিত গাইডলাইন জরুরি। সাপ্লাই চেইন অর্থায়নে সমন্বিত গাইডলাইন না থাকায় ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আস্থা পাচ্ছে না। এ কারণে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সাপ্লাই চেইন অর্থায়ন তেমন গতি পায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি (বিএসসিএমএস), ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠন, এসএমই ফাউন্ডেশন এ ধরনের পণ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে পারে। বিশেষ করে কর্পোরেট হাউজ এবং বড় ক্রেতাদের মধ্যে সাপ্লাই চেইনের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে পারে।

ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের বর্তমান পোর্টফোলিও প্রায় ৮৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯০ শতাংশের মার্কেট শেয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। বাংলাদেশে ধীরে ধীরে সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স জনপ্রিয় হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক নতুন পণ্যের বিষয়ে সব সময়ই ইতিবাচক। তবে নতুন পণ্যের সব ধরনের খোঁজ খবর এবং ঝুঁকি চিহ্নিত করে তার পর অনুমোদন দেয়া হয়।

অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকারদের মধ্যে সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সকে সুপরিচিত করতে পারলে এসএমই খাতের অগ্রগতি আরও ত্বরান্বিত হবে। যা এসডিজি লক্ষ্য পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা, সুনাম, পূর্ব অভিজ্ঞতা, ব্যাংকারদের দক্ষতা ও মেধা ইত্যাদি মূল ভূমিকা পালন করে।

তিনি আরও বলেন, সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে ইউনিফর্ম রেগুলেশন প্রয়োজন। যাতে সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান একইভাবে কাজ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যাংকারের খুব অভাব। ফলে দক্ষতা বৃদ্ধির তাগিদ দেন তিনি।

এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রিন্সিপাল ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট ডংগং জাং বলেন, এসএমই খাতসহ কিছু খাতে সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এডিবি ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেবে।

এমইউএইচ/এএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।