পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা ঠেকাতে বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৫ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

দেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ভারত পেঁয়াজের রফতানি মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ায় দেশের বাজারে প্রতিদিনই বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। চারদিনের ব্যবধানে ঢাকাসহ সারাদেশে বাজারভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২৫-৩০ টাকা বেড়েছে।

দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানিতে এলসি মার্জিন, সুদের হার হ্রাস, বন্দরে দ্রুত খালাস এবং নির্বিঘ্নে পরিবহন নিশ্চিত করতে সরকারের তরফ থেকে উদ্যোগ নেয়া হলেও তা কাজে আসছে না। এ অবস্থায় পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে কী করা যায় তা ঠিক করতে সরকারি বিভিন্ন দফতর, পেঁয়াজের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন মুনশি। মঙ্গলবার দুপুর টা ২০ মিনিটের দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার জন্য বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। তার পক্ষে বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন বাণিজ্য সচিব।

এদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার ও রামপুরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সোমবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৭৮-৮০ টাকা কেজি দরে, যা শনিবার ছিল ৭০ টাকা। এর আগে বৃহস্পতিবার বিক্রি হয় ৫০-৫৫ টাকায়। সোমবার ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৭০ টাকা কেজি দরে। এ পেঁয়াজ শনিবার বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। বৃহস্পতিবার ছিল ৪৫-৫০ টাকা।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামে সোমবার পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ বড় ৭৫ ও ছোট ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়, যা ১০ দিন আগে ছিল ৪০ টাকা।

এদিকে কেনা হয়নি পেঁয়াজ। সরকারের গোডাউনেও মজুত নেই। তারপরও ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণা দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কোনো প্রস্তুতি না থাকায় খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেনি ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র মো. হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে বলেন, সোমবার থেকে ন্যায্যমূল্যে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু বিক্রি শুরু হয়নি। পেঁয়াজ কেনার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। খোলাবাজারে বিক্রি শুরু করতে কয়েক দিন সময় লাগবে।

তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে দুটি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে স্বল্প সময়ে বন্দর থেকে পেঁয়াজ কেনার জন্য টিসিবি কাজ শুরু করেছে। পেঁয়াজ কেনা হলে এর ওপর ভর্তুকি দিয়ে দাম নির্ধারণ করা হবে। দ্রুত সময়ে এসব কার্যক্রম শেষ করা হবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে মিসর, তুরস্কসহ কয়েকটি দেশ থেকে আগামীতে পেঁয়াজ আমদানির কথাবার্তা চলছে।

এর আগে দেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার কারণে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে সভা হয়। সভায় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যার একটি ছিল সোমবার থেকে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করা। এ ছাড়া বন্দরে আমদানি করা পেঁয়াজ দ্রুত খালাস করা, পরিবহনের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করা, পেঁয়াজ আমদানিতে এলসি মার্জিন ও সুদের হার হ্রাসে বাংলাদেশ ব্যাংককে পত্র দেয়া।

ন্যায্যমূল্যে ট্রাক সেলের মাধ্যমে টিসিবি খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করবে বলে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। কিন্তু সোমবার খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারেনি টিসিবি। তবে আজ মঙ্গলবার থেকে সীমিত আকারে রাজধানীর পাঁচটি স্থানে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করার কথা রয়েছে টিসিবির।

এমইউএইচ/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।