যত অর্থের প্রয়োজন হোক না কেন দিতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩১ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

একসময় পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ালেও বর্তমানে তাদের আচরণে আমূল পরিবর্তন এনেছে বিশ্বব্যাংক। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে প্রকল্প তৈরি ও অর্থায়নে প্রস্তুত। যত অর্থের প্রয়োজন হোক না কেন তা দিতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক। তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য বিশ্বব্যাংকের পরামর্শও আমরা নেব।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নিজ কার্যালয়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ-ভুটান) মার্সি টেম্বনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

দেশে ৮৮ শতাংশ ব্লু ইকোনমি (সমুদ্র অর্থনীতি) কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। এ খাতে কাজ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

ডেল্টা প্ল্যান প্রসঙ্গে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নেদারল্যান্ডসের পাশাপাশি ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক এগিয়ে আসবে। এ খাতে অর্থ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা দেবে। ফলে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে। ডেল্টা প্ল্যানে যদি ভারতও আসতে চায়, তবে স্বাগত জানাব।

সড়ক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দেবে। বাংলাদেশের সড়ক উন্নয়নে যত টাকার প্রয়োজন তত টাকা দেবে সংস্থাটি। সড়কে বাস-বে (যাত্রী ওঠা-নামার জায়গা বা স্টপেজ), সড়কের পাশে চালকদের জন্য বিশ্রামাগারসহ নানা উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। এসব দেখে প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাংক।

নতুন আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভায় নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করবে সংস্থাটি। বাংলাদেশের বিষয়ে সংস্থাটির ইতিবাচক ধারণা হয়েছে। আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্থাটি অর্থায়ন করতে উন্মুখ।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ-ভুটান) মার্সি টেম্বন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশকে নিজেই চিনে নিয়েছি। সুন্দরবন ছাড়া বাংলাদেশের সব স্থানে ঘুরেছি। বাংলাদেশের অবকাঠামোগত সুবিধাসহ আর্থিক বিষয়ে ব্যাপক উন্নত হয়েছে। তিনি বলেন, নদী, পানি ও ব্লু ইকোনমিতে বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। মূলত আমি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে ব্র্যান্ডিং করতে এসেছি। ব্লু-ইকোনমির ৮৮ শতাংশ কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুললে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। পরে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছে অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। তবে এই প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খারিজ করে কানাডার আদালত বলেন, এই মামলায় কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি। প্রমাণ হিসেবে যেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো অনুমানভিত্তিক।

কানাডার আদালতের এই রায়ের পর সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বিশ্বব‌্যাংকের বিরুদ্ধে সরব হন। পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে অপমান করেছে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী-সাংসদেরা। তারা এ জন্য বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার দাবি তোলেন। একই সঙ্গে তারা বলেন, একটি জাতির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনার জন্য বিশ্বব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

এমইউএইচ/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।