টাকা পরিশোধ করলে ঋণ পাবে হল-মার্ক : অর্থমন্ত্রী
সোনালী ব্যাংকের ঋণ দুর্নীতিগ্রস্ত হল-মার্ক গ্রুপ আবার ব্যবসায় ফিরতে হলে সব টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, তাদের ব্যবসায় ফিরতে হলে বকেয়া টাকা সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। এরপর তারা ঋণ পাবে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, হল-মার্ক টাকা দেবে (পরিশোধ)। সবাই টাকা দেবে, এটা বিশ্বাস রাখেন। তারা আবার ব্যবসায় ফিরবে, সবাই ব্যবসায় ফিরবে। আমি নতুন করে ব্যবসায়ী সৃষ্টি করতে পারব না। যারা আছেন, এদের দিয়েই ব্যবসা করতে হবে। আমি চাই, আমার টাকাটা দিয়ে দিক, সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করুক। তবে হল-র্মাক টাকা দেবে।
আবারও ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চায় হল-মার্ক। ব্যবসা করলে হল-মার্ককে টাকা দেয়া হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হল-র্মাক ব্যবসা করবে, তার আগে আমাদের টাকা তাদের শোধ করতে হবে। সেই টাকা দিলে আমরা তাদের ঋণ দেব। তাদের সেই সক্ষমতা আছে। ব্যবসায়ীরা কখনও শেষ হয়ে যায় না। ব্যবসায়ীদের সবসময় একটা বর্ষাকাল আছে, সেটা মাথায় রেখেই কাজ করে।
সাভারে তাদের ফ্যাক্টরি সম্পূর্ণ অচল হয়ে গেছে বলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ফ্যাক্টরি অচল হলে তার নিচে যে... আছে, সেটা কী করবেন? নতুন অ্যারেজমেন্ট যখন হবে, তখন জানতে পারবেন। আজ আর এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে চাচ্ছি না।
জানা গেছ, স্মরণকালের সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে গত মে মাসে ঋণ খেলাপিদের জন্য বিশেষ নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মাত্র ২ শতাংশ এককালীন নগদ জমা (ডাউন পেমেন্ট) দিয়ে ১০ বছর মেয়াদে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট বা সম্পূর্ণরূপে পরিশোধের বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন খেলাপিরা। এ সুবিধার আওতায় নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে সরকারের সহায়তা চেয়েছে হল-মার্ক গ্রুপ।
আর্থিক খাতের অন্যতম এবং বহুল আলোচিত কেলেঙ্কারির জন্ম দেয়া হল-মার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি দিয়ে এ সহযোগিতা কামনা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ১১টি মামলার রায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তারা বর্তমানে কারাবন্দি।
অর্থমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের হোটেল শেরাটন কর্পোরেট শাখায় বিদ্যমান দায়দেনা পরিশোধের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আওতায় ২ শতাংশ হারে ডাউন পেমেন্ট নিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল, পাশাপাশি পুনঃতফসিলের কিস্তি পরিশোধের নিমিত্তে ব্যাংকিং সুবিধা তথা নতুন করে ঋণ পাওয়ার সুবিধাসহ সীমিত আকারে কারখানা চালুর লক্ষ্যে সাময়িকভাবে শর্তযুক্ত জামিনে মুক্ত হওয়ার সহযোগিতা কামনা করছি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম এবং হল-মার্ক গ্রুপভুক্ত একাধিক প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা প্রায় ১০০ কোটি টাকা বর্তমানে মহামান্য আদালতের আদেশক্রমে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। তা অবমুক্ত করে ওই টাকা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নীতিমালার শর্তানুসারে ঋণস্থিতি অর্থাৎ সোনালী ব্যাংক লিমিটেড কর্তৃক শুধু ফান্ডেড ঋণের জন্য দায়ের মামলায় দাবি করা দুই হাজার ৬৭৫ কোটি ৭১ লাখ টাকার ২ শতাংশ বাবদ ৫৪ কোটি টাকা ডাউন পেমেন্ট হিসাবে জমা করার সুযোগ প্রদান করবেন।’
এমইউএইচ/জেডএ/এমএস