সচেতনতা বাড়ানোই বীমা খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪২ পিএম, ২৯ জুন ২০১৯

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দেশের অর্থনীতির আকার। সেই সঙ্গে বেড়েছে বীমা খাতের পরিধিও। এরপরও অর্থনীতিতে বাড়েনি বীমা খাতের অবদান। এর মূল কারণ বীমা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সঠিক ধারণা নেই। তাই বীমা খাত প্রসারে এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শনিবার ‘ওয়ার্কশপ অন রেইজিং অ্যাওয়ারনেস রিগাডিং ইন্স্যুরেন্স’ শীর্ষক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বীমা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ বীমা খাত উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অরিজিৎ চৌধুরী, জীবন বীমা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান শেলীনা আফরোজ, সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম, জিটিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ মানুষ মনে করে বীমা আমাদের জন্য না। এর কারণ সাধারণ মানুষের কাছে বীমা যেতে পারেনি। ব্যাংকের কাছে মানুষ যেভাবে যায়, বীমার কাছে সেভাবে আসে না। বীমা কী জন্য সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে পারলে মানুষ বীমার প্রতি আগ্রহী হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘আমাদের বীমার ইতিহাস অনেক পুরাতন। কিন্তু আমি আইডিআরএতে যোগদানের পর দেখলাম কোনো উন্নয়ন নেই, সবকিছু অগোছালো। আমরা এ খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। গ্রাহকের বীমা দাবি প্রাপ্তির নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছি। যদি কেউ অভিযোগ করে বীমা দাবির টাকা পাচ্ছে না, তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। এ বিষয়ে আমরা একটি সেলও গঠন করেছি।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত কমিশন কেউ বন্ধ করতে পারেনি। আমরা এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছি। আশা করি এবার অতিরিক্ত কমিশন দেয়া বন্ধ হবে। কেউ ১৫ শতাংশের উপরে কমিশন দিতে পারবে না।’

শেলীনা আফরোজ বলেন, ‘শ্রম আইনে বলা আছে সব শ্রমিককে বীমার আওতায় আনতে হবে। সরকারি চাকরিজীবীদেরও বীমার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বীমা খাতের প্রসারে এসব বিষয় বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বীমা সম্পর্কে আমাদের সথেষ্ট সচেতনতা নেই। আমাদের যে এজেন্ট আছে তারাও সেভাবে শিক্ষিত না। এজেন্টদের সেভাবে শিক্ষা দিতে হবে যাতে তারা গ্রাহকের কাছে গিয়ে নিজের স্বার্থের কথা না বলে, বীমা গ্রাহকের কীভাবে কাছে আসবে সেই বিষয়টি সঠিকভাবে বোঝাতে পারে। ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার জন্য যে বীমা প্রয়োজনীয় এ বিষয়টি সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে।’

শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি বাড়ছে। বীমা খাতও বাড়ছে। কিন্তু অর্থনীতিতে বীমার অবদান বাড়ছে না। এর কারণ বীমা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে না।’

সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা বলেন, ‘বীমার ক্ষেত্রে প্রতারণার বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত। প্রতারণার অভিযোগ উঠার কারণ এ খাতে স্বচ্ছতার অভাব। আমরা দেখলাম আইডিআরএ গঠনের পর বীমাকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওার চেষ্টা করা হচ্ছে, একই সঙ্গে নানা অভিযোগও আসছে।’

এমএএস/এনডিএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।