ওয়াশ খাতে ব্যয়ের প্রবণতা কমছে : হোসেন জিল্লুর

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:১২ পিএম, ২৬ জুন ২০১৯

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে ব্যয়ের প্রবণতা ক্রমাগতভাবে কম বলে পরিলক্ষিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) এবং পৌরসভায় মানব সম্পদ ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তহবিলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। ওয়াটারএইড, ইউনিসেফ, পিপিআরসি, ফানসা-বিডি, ডব্লিউএসএসসিসি-বি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স- এর উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে যৌথভাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ২০১৯-২০ সালের জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে বরাদ্দ বাড়লেও এটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬ এবং ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জনে বিরাজমান চ্যালেঞ্জগুলো পূরণে যথেষ্ট নয়।

তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬ অর্জনের লক্ষ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে আরও ন্যায্য বরাদ্দ প্রয়োজন। কাউকে পেছনে রেখে নয়, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিশ্চিত করতে শহর ও গ্রামীণ এলাকার বাজেট বরাদ্দে বৈষম্য হ্রাস করাসহ দুর্গম এলাকা, যেমন- পাহাড়, চর, হাওর এবং উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে ওয়াশ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। মহিলা, শিশু ও প্রতিবন্ধী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

হতদরিদ্র ও গরীব- এ দু’ধরনের জনগোষ্ঠীর নিকট নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা পৌঁছে দিতে প্রয়োজনে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা আবশ্যক। পানি ও স্যানিটেশন সেক্টরের জন্য ‘সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ২০১১-২০২৫’ এর অগ্রগতি পর্যালোচনা ও হালনাগাদ করে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ ও শহর এলাকার মধ্যে বৈষম্য হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা।

ওয়াটারএইড ও ইউনিসেফ-এর সহযোগিতায় এবং পাওয়ার ও পার্টিসিপেসন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এর বিশ্লেষণের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকার ওয়াশ বাজেট বরাদ্দে দীর্ঘমেয়াদের ধারাবাহিকতায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞা রক্ষা করে চলেছে।

তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ এর সংশোধিত বাজেট বরাদ্দে উল্লেখযোগ্য চিত্র দেখা যায়, যা ৬৮.৪৯ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ৯৫.৭০ বিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে এ ইতিবাচক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ১০১.৬১ বিলিয়ন টাকায়। এছাড়া, বিশ্লেষণে ওয়াশ বাজেটের ক্ষেত্রে ভৌগলিক বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। গ্রামীণ ও চর এলাকায় তীব্র চাহিদা থাকা সত্ত্বেও নগর ও শহরগুলোতে বরাদ্দের পরিমাণ তুলনামূলক অনেক বেশি হয়ে থাকে। মোট ১১টি সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনার চারটি ওয়াশায় বরাদ্দ বাড়লেও কমেছে গ্রামীণ এলাকায় বরাদ্দ।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচির)-এর সংশোধিত বাজেট বরাদ্দ ২০১৮-১৯ সালে ২০.৫১ বিলিয়ন থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৪.১৩ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু তারপরও এ বাজেটে উল্লিখিত চারটি ওয়াশার জন্য যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তার অর্ধেকেরও কম যা ৪৫.১৮ বিলিয়ন। এ বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রতিশ্রুতিতে এখনও বেশ অগ্রগতির সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, স্যানিটেশন প্রচারাভিযানকে টেকসই ও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য এবং শহুরে এলাকায় সমন্বিত পানি পরিশোধন ও সরবরাহের প্রতিশ্রুতি এখনও অর্জন হয়নি।

এফএইচএস/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।